গাজীপুরের শ্রীপুরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগের ১৬ ঘণ্টা পর শিউলী আক্তার (৩৫) গৃহবধূ মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূ মারা যান। সোমবার রাত ১২টার দিকে শিউলী অগ্নিসংযোগের শিকার হয়।
নিহত গৃহবধূ শিউলী ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের শুক্কুর আলীর কন্যা ও বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সৌরভকাঠি উপজেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে শহীদুল ইসলামের (৪০) স্ত্রী। শ্রীপুর থানা পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করেছে।
নিহতের বাবা শুক্কুর আলী বলেন, গত ১৪ বছর আগে তার কন্যার সাথে শহীদুলের বিয়ে হয়। দু'জনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে কিন্তু এ সংসারে কোন সন্তান নেই। বিয়ের আগে থেকেই তার কন্যা গাজীপুরের বিভিন্ন পোষাক কারখানায় চাকরি করত। শহীদুল পেশায় গাড়ি চালক। সে তার প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে।
শিউলী শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আব্দুর রশীদের বাড়িতে ভাড়া থেকে ছাতিরবাজার দুলাল ব্রাদার্স লি: (ডিবিএল) শিল্প গ্রুপের পোশাক কারখানায় শ্রমিকের চাকরি করত। প্রতি মাসে কারখানার বেতনের সময় স্বামী শহীদুল গৃহবধূ শিউলীর কাছ থেকে প্রায় সকল টাকা নিয়ে যেত।
সোমবার রাতে অনুরূপভাবে বেতনের টাকা নিতে আসলে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাত ১২টার দিকে শিউলী ঘুমিয়ে পড়লে শহীদুল ভাড়া বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের ঘরে বাইরে থেকে দরজায় সিটকিনি আটকিয়ে দেয়। পরে শিউলীর গায়ে কোরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় শিউলী স্বামী শহীদুলকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। শব্দ শুনে বাড়ির মালিক আব্দুর রশীদ এসে ভাড়াটিয়াদের সিটকিনি খুলে শিউলীকে উদ্ধার করে। ততক্ষণে শিউলীর শরীরের অধিকাংশ ঝলসে যায়। শহীদুলেরও শরীরের কিছু অংশ পুড়ে যায়।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক বলেন, গৃহবধূ শিউলীর অভিযোগে স্বামী শহীদুলকে তাৎক্ষণিক আটক ও শিউলীকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী দু’জনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে গৃহবধূ শিউলী মারা যায়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।