Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সন্ত্রাস-জঙ্গি দমনে পুলিশ বাহিনীকে পাশে চাই: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:২৮ PM
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:২৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সন্ত্রাস-জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাহিনীটির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে তিনি এই নির্দেশ দেন।

সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দুই দানবের মোকাবেলায় সরকার সক্ষমতা দেখিয়েছে। তবে, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। যেকোন জঙ্গি আক্রমণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ করতে আমাদের কৌশল থাকতে হবে। পাশাপাশি গোয়ন্দো তদারকি ও প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বাস্তব যে যথাসময়ে পুলিশি মামলা শেষ হয় না এবং যিনি এই দায়িত্ব পালন করেন এটি তার দুর্বলতা।
এজন্য এই বিষয় তদারকিতে আপনাদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের একটি টিম হিসেবে মামলার পরিণতির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালতে বছরের পর বছর মামলা ঝুলে থাকছে। এর নিষ্পত্তিতে সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি আইনজীবীদেরও প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি এ বিষয়গুলো দেখার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে এই আইনের সমালোচনা করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে নিরপরাধ ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং তাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে এই আইন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পদ এবং তাদের অধিকার সুরক্ষায় আইনটি প্রণীত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনটি সাইবার অপরাধের তদন্ত, মামলা দায়ের, সনাক্তকরণ ও অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা করছে।

তিনি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মূলোৎপাটনে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, ঘুষ হচ্ছে উন্নয়নের প্রতিবন্ধক এবং মাদক একটি দেশ ও একটি জাতিকে ধ্বংস করে। মাদকের কারণে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এমনকি সন্তানরা তাদের পিতা-মাতাকেও হত্যা করে।

শেখ হাসিনা মেগা প্রকল্প পাহারায় বিশেষায়িত পুলিশ বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আমরা পদ্মা সেতুর মত অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এসব প্রকল্পের নিরাপত্তায় আমাদের আরো বিশেষায়িত পুলিশ সদস্য প্রয়োজন।

পুলিশের যথাযথ প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার যে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে, সেগুলোতে বিশেষায়িত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

তিনি নৌ পুলিশ, বিমানবন্দর পুলিশ এবং ট্যুরিজম পুলিশের মতো অন্যান্য বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিটগুলোর বিশেষায়িত প্রশিক্ষনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অপরাধীদের কর্মকান্ডের ধরন অনুযায়ি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে পুলিশকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়।

তিনি বলেন, যেকোন পরিস্থিতি দ্রুততার সাথে মোকাবিলার লক্ষ্যে সক্ষম করে তুলতে তাদেরকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে পুলিশের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে তাদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ বাহিনী ব্যাপক শ্রম দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আপনারা দক্ষতার সাথে কাজ করায় আমরা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি এবং এজন্য আমি আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

তিনি বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে কাজ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের যাত্রা এখনও শেষ হয় নাই, আমাদেরকে আরও দীর্ঘপথ যেতে হবে।’

পুলিশের জনবল বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণ যাতে তাদের কাঙ্খিত সেবা পেতে পারে সেজন্য পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে জনবল বৃদ্ধি করা হবে।

পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনা পুলিশ সদস্যদেরকে বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাস ও মিশনে পদায়নের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর বছরে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করা ব্যাপারে তাঁর সংকল্পের কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোকলেসুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) (হাইওয়ে) আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম, ঢাকা তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং রাজবাড়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

Bootstrap Image Preview