Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হাতিয়ায় ব্যাংক থেকে গ্রাহকের লাখ টাকা গায়েব

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:৩৮ PM
আপডেট: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:৩৮ PM

bdmorning Image Preview


নোয়াখালীর হাতিয়ায় সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট থেকে এক মহিলা গ্রাহকের ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাতিয়া উপজেলা পরিষদ শাখায়। তবে ব্যাংক ম্যানেজাররের দাবি গ্রাহক বাহক চেকের মাধ্যমে নিজেই তার হিসাব থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংক পাড়ায় ও আশপাশের ব্যবসায়ী হিসাবধারীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, চরকিং ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকার খতিজা খাতুন নামে ৭০ বছর বয়সী এক মহিলা ২০১৭ সালে সোনালী ব্যাংক হাতিয়া উপজেলা পরিষদ শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব (নং-৮৪৩৩) খোলে। ওই মহিলার ৪ ছেলে, সবাই প্রবাসী। মায়ের একাউন্টে ছেলেরা বিভিন্ন সময়ে টাকা পাঠায়। কেবল নিজের নাম লিখতে পারে এই মহিলা বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন করার জন্য ব্যংকে এসে ব্যাংকের গার্ড ফরহাদ হোসেনের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। চেক পূরণ করে টাকা উত্তোলন করে গার্ড ফরহাদ সমুদয় টাকা ওই মহিলার হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে বখশিস নিয়ে থাকে কখনো ৫০ কখনো ১০০ টাকা। এরই মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারী মহিলার স্বাক্ষর জাল করে কে বা কারা বাহক চেকের মাধ্যমে খদিজার হিসাব থেকে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যায়। পরদিন মহিলা টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংক এসে জানতে পারে তার একাউন্ট থেকে তারেক নামে এক বাহক আগের দিন ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। এতে গ্রাহক খতিজা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

হাতিয়া উপজেলা পরিষদ শাখার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, বাহক চেকের মাধ্যমে খদিজা তার হিসাব থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। তারেক নামের এক যুবককে তিনি বাহক চেক দিয়েছেন। বাহক চেকের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকার উবর্ধে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে গ্রাহক (হিসাবধারী)কে ফোন দিয়ে জানাতে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানেজার বলেন, প্রতিদিন ৩/৪ শত গ্রাহককে বিদায় করতে হয়। কয়জনকেই বা ফোন দেওয়া যায় ? তাছাড়া জনবল সংকট।

খতিজা জানায়, আমি কাউকে চেক দিইনি। ব্যাংক থেকেও আমাকে ফোন দেওয়া হয়নি। আমি চেক লিখতেও জানিনা। বিভিন্ন সময়ে গার্ড ফরহাদ আমার চেক লিখে দেয়। সে একবার চেকে ভুল হয়েছে বলে আমার কাছ থেকে নতুন আরেকটি পাতা নিয়ে নিয়েছে। ভুল চেকটি আমাকে ফেরত দেয়নি। যে চেকটির মাধ্যমে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে টাকা গায়েব করা হয়েছে সেই চেকটি দেখতে চাইলে ম্যানেজার বলেন ডিজিএম স্যারের অনুমতি ছাড়া চেক দেখানো যাবে না।

খতিজা আরো জানায়, গার্ড ফরহাদ জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে আমাকে টাকা তুলে দিয়ে আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা হাওলাত নেয় যা একমাস পর ফেরত দেয়ার কথা ছিল। ফরহাদ একমাস যাওয়ার আগেই নয় দিনের মাথায় অর্থাৎ ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা গায়েব হওয়ার পরদিনই আমাকে হাওলাতী টাকা পরিষোধ করে দেয়। এতে আমার ধারণা সেই আমার অজান্তে এই টাকা তুলে নিয়েছে। 

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, চেকের বাহকের নাম তারেক ও অপর পৃষ্ঠায় মোবাইল নং দেওয়া হয়েছে ০১৮৮৭৭৭৯৮১৯। তবে এই নম্বরে এ প্রতিবেদক কয়েকবার কল দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেয় ও পরে সিম বন্ধ করে রাখে।

এদিকে একাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা গায়েব হওয়ার প্রতিকার চেয়ে খদিজা সোমবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ব্যাংকের গার্ড ফরহাদকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।  

এ ব্যাপারে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান শিকদার জানান, খদিজা খাতুনের অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হলে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview