আনন্দ প্রকাশে মানুষ নানা ধরনের পথ অবলম্বন করে থাকে। কেউ বাতাসে দেয় ঘুসি। কেই দেয় লাফ। কারো কারো দৌড় দেওয়ারও রেকর্ড খোঁজে পাওয়া যায়। কেউ নিজের শরীরকে করে তুলেন ক্যানভাসে। কারো আবার পোশাকে ভিন্নতা। নানান ধরনের আনন্দ প্রকাশ মানুষের মাঝে রয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল একাদশ জাতীয় সংসদে বিজয়ী হওয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব। সেখানে দেখা যায় ভিন্ন সাজে এসেছেন ভক্ত ও কর্মীরা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে ও বাংলা একাডেমির সামনে শেখ কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তিকে দেখা যায় তিনি ঢাকার দোহার থেকে এসেছেন একটি নৌকা নিয়ে। কাঠের ও টিনের পাতে তৈরি সোনালী রঙের নৌকাটি নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন।
কুদ্দুস জানালেন তার বাবা শেখ দিরাজদ্দিন ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু যখন নির্বাচন করেন তখন তিনি একটি নৌকা তৈরি করে নিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। বঙ্গবন্ধু খুশি হয়ে তাকে কিছু উপহার দিতে চেয়েছিলেন তিনি সবিনয়ে তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বঙ্গবন্ধু দোহারের পাতলাঘাটটি তাকে ইজারা দেন কোন ধরনের বিনিময় ছাড়াই। সারা জীবন নৌকা নিয়ে প্রচার কাজ চালিয়েছিলেন দিরাজদ্দিন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই ঘাটটি প্রভাবশালীরা নিয়ে নেয়। আজ হতে ২৬ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন শেখ দিরাজদ্দিন।
বাবার মৃত্যুর পর নৌকা বানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন শেখ কুদ্দুস। নৌকায় লেখা রয়েছে "সংগ্রাম ৭১"।
কুদ্দুস বলেন, আমার নৌকা দিয়ে অনেকেই ছবি তুলে দেখে ভালো লাগে। সমাবেশে দেখা যায় অনেক মানুষ নৌকা নিয়ে ছবি তুলছে।
টিএসসির একটু সামনে দেখা যায় শেখ মো. নুরুল ইসলামকে। কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর এলাকার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের ১০নং ওয়ার্ডে তার বাড়ি।
চুল কেটে মাথায় ৭টি নৌকা বানিয়েছেন। গান চলছে। নাচছেন তিনি। সাথে যোগ দিয়েছে কয়েকজন শিশু। তার নাচ আর মাথার নৌকা দেখে আনন্দ উপভোগ করছেন মানুষরা।
পাবলিক লাইব্রেরির সামনে দেখা যায় তিন ব্যক্তিকে। তাদের মধ্যে একজন পাট দিয়ে ভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করেছে। তার হাত, মুখ কিছুই যায় না দেখা। হাতে পতাকা ও বন্দুক। পাশে একজন বন্দুক ও আরেক রাইফেল নিয়ে সহযোগী হয়েছেন।
হাইকোর্টের বাম পাশের গেটের কাছে দেখা যায় ৪টি হাতি। যাদের কপালে লেখা প্রচার লীগ। মানুষের জটলা আর হাতিকে ঘিরে ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে।
মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম থেকে এসেছেন মো. মতিউর রহমান (মতি ভাই) নামের ৭৫ বছরের এক প্রবীণ। তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ শুনতেও এসেছিলেন। বললেন, অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসে সেই কারণেই এতো ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ।