Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জাপানে অপরাধ ছাড়ায় বাংলাদেশির হাতে হাতকড়া আর কোমরে দড়ি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:২৭ PM
আপডেট: ১৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্প্রতি জাপানে অভিবাসনপ্রত্যাশী এক বাংলাদেশির ছবি তুলেছেন ওডা নামে প্রত্যক্ষদর্শী। এরপর তিনি ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, অভিবাসনপ্রত্যাশী এক বাংলাদেশিকে কোমরে দড়ি ও হাতে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবিটি প্রকাশের পর এ নিয়ে অনলাইনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশটির অভিবাসন কেন্দ্রগুলোতে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে এমন দুর্ধর্ষ অপরাধীর মতো আচরণ মেনে নিতে পারছেন না অনেকে।

আশাহি ওডা জাপানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে থাকেন।

জাপান টাইমস জানিয়েছে, মারুফ আব্দুল্লাহর (৩৬) কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই ছবি ও নাম প্রকাশ করেছে তারা। মারুফ চান, তার মতো মানুষদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করা হয় তা জনগণ জানুক।

তিনি বলেন, ‘আমি অপরাধী নই।’ হাতকড়া ও দড়ি পরানোকে অপমানজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাপানের একটি হাসপাতালে গত বছরের অক্টোবরে তোলা একটি ছবি সম্প্রতি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে।

জাপান টাইমসে প্রকাশিত ওই ছবিতে দেখা গেছে, হাতকড়া পরানো অবস্থায় মারুফ আব্দুল্লাহ (৩৬) নামে এক বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। সেখানে অভিবাসনপ্রত্যাশী মারুফের কোমরে বাঁধা দড়িটিকে ধরে রেখেছে এক কর্মকর্তা।

জাপান টাইমস জানিয়েছে, এরইমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি নিয়ে তুমুল বিতর্ক ও আলোচনা চলছে। ছবির নিচে দেয়া কমেন্টে একজন লিখেছেন, ‘এ ঘটনাকে আমার কাছে নিষ্ঠুর আচরণ মনে হলো। উনি তো চোর বা খুনি নন।’

এসওয়াইআই পিংকি ড্রাগন নামে এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘জাপানের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে আসা এক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে কোমরে দড়ি বাঁধা এবং হাতে হাতকড়া পরা অবস্থায় হাসপাতালে যেতে বাধ্য করেছে। এভাবে অপমান করা হয়েছে তাকে। অবশ্য এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। অনেক অবৈধ অভিবাসী ও শরণার্থীকেই অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে এভাবে অপদস্থ হতে হয়।’

জাপানে বৈধ ভিসাহীন অভিবাসন প্রত্যাশীদেরকে অভিবাসন কেন্দ্রে আটক রাখা হয়। সেখানে রেখেই তাদের বিতাড়নের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ। যারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারে না এবং যারা অনেকবার অভিবাসনের জন্য আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছে, তাদেরকে আটক করা হয়।

জাপানের অভিবাসন ব্যুরোর দাবি, আইন মন্ত্রণালয়ের অধ্যাদেশ মেনেই আটকদেরকে হাতকড়া ও দড়ি পরায় তারা। তবে এ হাতকড়া ও দড়ি পরানোর দৃশ্য যেন জনপরিসরের সামনে না আসে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকেন তারা। আইন মন্ত্রণালয়ের সংশোধন ব্যুরো বলছে, জনসমক্ষে যেন এমন ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাসপাতালে ইউনিফর্ম না পরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তাছাড়া আটক ব্যক্তিকে সাধারণত হাসপাতালের পেছন দিকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে বলা হয়।

জাপানে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন সেদেশের চিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ স্কুলের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনবিষয়ক অধ্যাপক ইয়াসুজো কিতামুরা।

জাপান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘যতটা সম্ভব অভিবাসন কেন্দ্রে আটক থাকাদের মানবাধিকারের সুরক্ষা দিতে হবে। আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তির যেমন সুরক্ষা দেয়া হয় তেমন কিংবা তার চেয়েও বেশি সুরক্ষা আটককৃত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দিতে হবে।’

Bootstrap Image Preview