'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ' প্রধানমন্ত্রীর এই শ্লোগানকে সত্যিকার অথের্ই বাস্তবায়ন করতে শায়েস্তাগঞ্জের সদর দফতর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি থেকে আলোর ফেরীওয়ালা সেজে ব্যাটারি চালিত (অটোরিক্সা) টমটম গাড়িতে মাইক নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
জামানত জমাদানের মাত্র ৫ মিনিটেই পল্লীবিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহকের বাড়িতে পল্লীবিদ্যুতের মিটার ও তার সংযোগ দিয়ে ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। গ্রাহকদের এখন আর বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীগনই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঝামেলা মুক্তভাবে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন উদ্যোগ্যটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সেই সঙ্গে তাদের এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি শায়েস্তাগঞ্জ সদর দফতর থেকে উদ্ধোধন করেন, প্রধান অতিথি বাংলাদেশে পল্লী বিদ্যুৎতায়ন বোর্ডের (অর্থ) সদস্য ও হবিগঞ্জের সাবেক জেলা প্রসাশক জয়নাল আবেদীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস আলম, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি বোর্ডের সচিব ও জহুর চান বিবি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন রুমি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ফেরী করে গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছেন। তাদের এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন 'আলোর ফেরিওয়ালা'।
হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি শায়েস্তাগঞ্জ সদর দফতর অফিস সূত্র জানায়, সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জ জেলার প্রত্যেক উপজেলার বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। শতকরা ৯১ ভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে হবিগঞ্জ জেলায়। বাকি ৯ ভাগ বিদ্যুৎ ৫ হতে ৬ মাসের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। বর্তমান সরকারের সাফল্য ২৭ বছরের হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহক সংখ্যা ৩ লাখ ৮১ হাজার ২'শ ৭৩ জন এবং ২০০৯ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৭০ হাজার ৩শ ৯৫ জন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে হপবিস। বাকি গ্রাহকদের সংযোগ দেওয়া হলে শতভাগ বিদ্যুৎ ঘোষণা করা হবে।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আলহাজ্ব মোঃ মোতাহার হোসেন, বি-বাড়ীয়া পবিবো নির্বাহী প্রকৌশলী আলতাব হোসেন চৌধুরী হপবিস এজিএম (প্রসাশন) এফ, এম সাইদুর রহমান, কারিগরী ডিজিএম মোঃ রেজাউল করিম, এজিএম (সদস্য সেবা) মোঃ শামিউল আশরাফ জানান এক সময় গ্রাহকদের বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানাভাবে শিকার হতে হত। এখন সে চিত্র একবারেই পাল্টে গেছে। গ্রাহকদের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে যাতে হয়রানীর শিকার হতে না হয় সেজন্য অফিসগুলোতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রাহকদের জন্য বসানো হয়েছে হেল্প ডেক্স কর্নার। গ্রাহকরা বিভিন্ন আবেদন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, জামানত জমা ও উত্তোলনসহ যে কোন সেবা এই হেল্প ডেক্স কর্নারের মাধ্যমে বিনামূল্যে গ্রহণ করতে পারছেন।
সর্বশেষ পল্লী বিদ্যুৎ সদর দফতর ও জোনাল অফিস গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অতি সহজেই বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। আলোর ফেরিওয়ালার ইজিবাইক (অটোরিক্সা) টমটম গাড়িতে মিটার ও ড্রফ তার নিয়ে সংযোগ দিয়ে আসছেন। এই সেবার আওতায় একজন গ্রহকের বাড়িতে ড্রফ তারের দূরত্ব ১৩০ ফুট, দুই কপি ছবি, গ্রাউন্ডিং রড ও মিটার বোর্ড দিয়ে ঘর ওয়ারিং, ভ্যাটসহ আবেদন ফি ১১৫ টাকা, নিরাপত্তা জামাতন ফি ৪শ টাকা এবং সদস্য ফি ৫০ টাকা জমাদানের ৫ মিনিটে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে যাচ্ছেন হবিগঞ্জের ৯টি উপজেলাবাসী। গ্রাহককে এখন আর বিদ্যুতের জন্য দিনের পর দিন অফিসে গিয়ে ঘুরতে হয় না। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন গ্রাহকদের খুঁজে বের করে ঝামেলা মুক্তভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুুৎ শায়েস্তাগঞ্জ সদর দফতর এজিএম (প্রসাশন) এফ এম সাইদুর রহমান সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আন্তরিক সহযোগিতা, পরামর্শ ও প্রচেষ্টায় বিভিন্ন গ্রামে গ্রাহকদের শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে।