Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জালের রাজত্ব করতে সহকর্মীকে খুন, ১৪ দিন পর লাশ উদ্ধার 

সোহেল আহমেদ খান, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৩৫ PM
আপডেট: ১৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৩৫ PM

bdmorning Image Preview


নিজের জাল চুরি হওয়ায় বেকার হয়ে পরে পরিমল চন্দ্র বর্মনের (৫২)। পরিমলের বেকারত্বের কারণে সহকর্মী বোরহান উদ্দিন (৩৮) একাই শীতলক্ষ্যা নদীতে রাজত্ব করছিল। তাই নিজের রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে পরিমল ও তার ভাতিজা কমল চন্দ্র বর্মন (৩৪) মিলে বোরহানকে খুন করে। পরে সেই লাশ জাল দিয়ে পেঁচিয়ে নৌকার সাথে বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজ করে দেয়।

ঘটনাটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ দক্ষিণ নারগানা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ঘটে। ঘটনার ১৪ দিন পর কালীগঞ্জ, পলাশ, টঙ্গী ও ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কালীগঞ্জ ও পলাশ থানা পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগীতায় ২ দিনের চেষ্টায় বুস্তায়(১৬ জানুয়ারি) বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণ নারগানা এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২০।  

উদ্ধারের পর ওইদিন বিকেলেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। নিহত এবং আটক সবাই উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার বাসিন্দা।

খুন, উদ্ধার, আটক ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া।  

স্থানীয় ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, পরিমল ও বোরহান শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরার কাজ করতেন। বেশ কিছুদিন আগে পরিমলের জাল নিখোঁজ হয়। সন্দেহের তীর বিধে বোরহানের দিকে। পরিমলের জাল হারিয়ে যাওয়াতে বোরহান একাই শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরার রাজত্ব করতে থাকে। চাচা পরিমল ও ভাতিজা কমল মিলে পরিকল্পনা করে বোরহানকে হত্যা করবে। তাহলে তারাই শীতলক্ষ্যা নদীতে জাল-জলের রাজত্ব করবে। সেই পরিকল্পনার ধারাহিকতায়  ২ জানুয়ারী দিবাগত রাতে বোরহান নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বের হয়। ওই রাতেই চাচা পরিমল ও ভাতিজা কমল মিলে বোরহানকে খুন করে লাশ জাল দিয়ে পেঁচিয়ে নৌকার সাথে বেধে শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজ করে দেয়।

নিখোঁজের ৫ দিন পর বোরহানের স্ত্রী বাদী হয়ে ৭ জানুয়ারী কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং- ২৩৬। ঘটনার ১৩ দিন পর ১৫ জানুয়ারী নিহতের শ্যালকের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে পরিমল ও ভাতিজা কমল।

পরে স্থানীয়রা পরিমলের ছেলে পাপন চন্দ্র বর্মনসহ (১৮) ৩ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে আটককৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারী কালীগঞ্জ, পলাশ, টঙ্গী ও ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কালীগঞ্জ ও পলাশ থানা পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগীতায় শীতলক্ষ্যা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। রাত পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করতে না পেরে ওই দিনের মত উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করেন। পরদিন সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার কাজ শুরু হয়। পরে ওইদিন বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুরে পাঠানো হয়।  

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া জানান, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের সত্যতা মিলেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে এবং আটককৃতদের বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে গাজীপুর প্রেরণ করা হয়েছে।  

 


 

Bootstrap Image Preview