নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের নৌকায় ভোট না দেওয়ায় সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) গণধর্ষণ এবং নির্যাতেনের ঘটনায় আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম জসিম।
বৃহস্পতিবার রাতে জসিমকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনায় এ নিয়ে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হলো।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হওয়া জসিম মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন। তবে তদন্তে তার নাম এসেছে। তাই জড়িত সন্দেহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া জসিমকে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীতে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ঐ নারীর স্বামী বলেন, তিনি পেশায় অটোচালক। এক মাসের বেশি সময় অসুস্থ তিনি, অটোরিকশাটিও বিকল। আয়-রোজগারও নেই। অসুস্থতার কারণে ভোটের দিন কেন্দ্রেও যাননি। স্ত্রী আশপাশের কয়েকজনের সঙ্গে ভোট দিতে গিয়েছিলেন। ভোট দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রে বেচু, সোহেল, স্বপনসহ কয়েকজনের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। তারা তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে রাতে তারা বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করে সন্তানসহ সবাইকে বেঁধে ফেলে এবং স্ত্রীকে ঘরের বাইরে নিয়ে পিটিয়ে আহত এবং ধর্ষণ করে।
নির্যাতনের শিকার নারী নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারধরের শিকার তাঁর স্বামীও।
নির্যাতিত ঐ নারী বলেন, গত তিন দিনের চিকিৎসায় তার অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। শরীরে এখনো প্রচণ্ড ব্যথা।
ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই নারীকে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ গতকাল বিকেলে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন গতকাল বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছেন, এ মামলায় এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জসিম ছাড়া অন্যরা হলেন ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযুক্ত চরজুবলী ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য রুহুল আমিন (৪০), প্রধান আসামি মো. সোহেল (৪০), আসামি মো. বেচু (২৫), মো. স্বপন (৩৫), বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০)।
উল্লেখ্য, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় ৩১ ডিসেম্বর নয়জনের নাম উল্লেখ করে চরজব্বর থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো পাঁচজন গ্রেফতারের বাইরে রয়েছেন।