Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লালমনিরহাটে অপহৃত শিশুকে ২২ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:১৭ PM
আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:১৭ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব সির্ন্দুণা গ্রামে অপহৃত শিশুকে গত ২২ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি অপহরণকারী চক্রের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করা হলেও তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে নিজ সন্তানকে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে শিশুটির বাবা সুবোধ চন্দ্র ও মা রুপালী রানী।

পুলিশ ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত মাসের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে শোবার ঘরের বিছানায় ওই শিশুটিকে ঘুম পারিয়ে অদূরের টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যান মা রুপালী রানী। কিছুক্ষণ পর ঘরে এসে তিনি দেখেন, তার ওই ৩১ দিন বয়সী শিশুটি ঘরে নাই। এরপর অনেক খোঁজাখুজি করেও শিশুটির হদিস না পেয়ে হাতীবান্ধা থানায় প্রথমে একটি ডিজি করা হয়। তবে ঘটনার কয়েকদিন পর শিশুটির কাকি (চাচি) সোনালী রানী অপহৃণের বিষয়টি স্বীকার করেন।

সোনালী অপহৃত শিশুর বাবা সুবোধ চন্দ্রের ছোট ভাই বিকাশ চন্দ্রের স্ত্রী। ঘটনার সময় পাশের রুমেই সোনালী তার বাচ্চাকে ঘুম পাড়াচ্ছিলেন বলে পরিবার ও পুলিশের একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে ঠিক কি কারণে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারছেনা কেউ।

এদিকে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে উদ্ধারের কথা বলে অভিযুক্ত সোনালী রানী, তার স্বামী বিকাশ ও তার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় স্বজনরা বিভাগী শহর রংপুর গিয়ে সুকৌশলে সটকে পড়েছে। এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর ৮ জনের নাম উল্লেখ করে হাতীবান্ধা থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন শিশুটির বাবা সুবোধ চন্দ্র । কিন্তু গতকাল সোমবার পর্যন্ত ওই মামলার কোন আসামিকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

অপহৃত শিশুর মা রুপালী রানী বলেন, 'ঘটনার কয়েকদিন পর সোনালী আমার ৩১ দিনের শিশুকে ঘর থেকে নিয়ে গিয়ে এক বোরকা পড়া মহিলার হাতে তুলে দেয়ার কথা স্বীকার করেছে। আর এ কাজে তার বাবার বাড়ির আত্মীয় স্বজনরাই জড়িত। ফলে তারা আমাকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রংপুরে নিয়ে যায় শিশুটিকে ফেরত দেয়ার কথা বলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা আমাকে এক জায়গায় বসিয়ে রেখে- শিশু ফেরত আনার কথা বলে, সেই যে চলে গেছে-আর ফিরে আসেনি। জানিনা আমার সন্তান এখন কোথায় আছে, কেমন আছে? বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন মা রুপালী রানী।

শিশুটির বাবা সুবোধ চন্দ্র জানান, সোনালীর সাথে তার বাবার বাড়ির লোকজন প্রায় সময় দেখা করতে এসে ফিসফিস আলাপ করে চলে যেতেন। সব থেকে বেশি আসতেন তার জ্যাঠাতো ভাই ও ব্যাংক কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র। পারিবারিক ভাবে আমাদের সাথে তাদের বনিবনা না হওয়ায় তারাই সংঘবদ্ধভাবে আমার শিশুকে অপহরণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তা পলাশ প্রভাশালী হওয়ায় পুলিশ আজ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার কিংবা আমার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ বাবা সুবোধ চন্দ্রের।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা থানার ওসি তদন্ত সুমন কুমার মোহন্ত বলেন, 'আসামিদের গ্রেফতারে আমরা রংপুর ও হাতীবান্ধাসহ বেশ কিছু যায়গায় অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। অপহৃত শিশু উদ্ধারসহ আসামি গ্রেফতারে সর্বাত্বক চেষ্ট চলছে বলেও দাবি সুমন কুমার মোহন্তের।'

হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, 'এঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদেরকে গ্রেফতার করা হলে শিশুটিও উদ্ধার হবে বলে মনে করেন তিনি।'

Bootstrap Image Preview