শহিদুল ইসলাম, বেনাপোল প্রতিনিধি:
যশোরের শার্শায় মা ও শিশু হাসপাতাল দু'টি নির্মিত হলেও কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ। ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেনাপোল স্থলবন্দর ও গোড়পাড়া নামক স্থানে ১০ শয্যা বিশিষ্ট দু'টি মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল ৩ বছর যাবৎ পড়ে থাকলেও চিকিৎসার কোন কার্যক্রম শুরু হয়নি। কর্মকর্তারা বলছে- দুই দপ্তরের টানাপোড়েনের কারণে এর কার্যক্রম শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে হাসপাতাল দুইটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বিগত তিন বছর অতিবাহিত হলেও সেখানে কোন চিকিৎসা ব্যবস্থার কার্যক্রম চলছে না। ফলে বন্দরনগরী বেনাপোল ও নিজামপুর ইউনিয়নের গোড়পাড়ার মানুষসহ এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্থলবন্দর বেনাপোলে চাকরি ব্যবসাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করে বন্দরে। জরুরী কোন দুর্ঘটনায় কোন শ্রমিক আহত হলে বা কোন প্রসূতির জরুরী ডেলিভারীর প্রয়োজন হলে তাকে বেনাপোল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। সেখানে সুচিকিৎসার কোন ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে নাভারন অথবা যশোর যেতে যেতে পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বেনাপোল পৌর সভায় ১ লাখ ৩০ হাজার এবং এ থানার আওতায় আরো তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের বসবাসের জন্য গড়ে ওঠেনি সরকারিভাবে কোন চিকিৎসালয়। বেসরকারিভাবে যেসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো আছে তাতে নেই পর্যাপ্ত কোন ডাক্তারের ব্যবস্থা। সপ্তাহে ৭ দিনে তিন দিন সেখানে রোগী দেখতে ডাক্তার আসে দূর-দূরান্ত থেকে। সীমান্ত ঘেষা এ শহরের মানুষ নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
অনেকের অভিযোগ, দক্ষিণাঞ্চলের সরকারের রাজস্ব আদায়ের প্রাণকেন্দ্র বেনাপোল বন্দর। সেখানকার অবস্থা এত নাজুক তা দেখেও না দেখার ভান করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের অফিস সহকারী রুস্তম আলী জানান, এ হাসপাতালটি চালু হলে এ জনপদের মানুষ উপকৃত হবে।
নিজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, আমার ইউনিয়নে ২৮ হাজার ১৮৯ জন মানুষের বসবাস। কিন্তু মা ও শিশু হাসপাতাল এর কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় ৩ বছর যাবৎ সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত।
এ ব্যপারে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অশোক কুমার বলেন, মা ও শিশু হাসপাতাল কেন্দ্র দু'টি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের নিন্ত্রয়ণাধীন। সেজন্য এর কার্যক্রম চালু হওয়ার বিষয়টি তারাই বলেতে পারেন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, গোড়পাড়া মা ও শিশু হাসপাতাল কেন্দ্রটি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের নিকট হস্তান্তর না করায় কার্যক্রম শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে।