পদ্মায় নাব্যতার কারণে ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লৌহজং চ্যানেলে নাব্যতা সংকট সমাধানের জন্য চ্যানেলের মুখে ড্রেজার মেশিন স্থাপনের কারণে ফেরি বন্ধ আছে।
সোমবার বিকেল থেকে ওই রুটে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচল। পরীক্ষামূলকভাবে চলছে ছোট ও কে-টাইপ ফেরি কুমিল্লা, কাকলী, কেতকী ফরিদপুর ও ঢাকা নামের পাঁচটি ফেরি। তবে লঞ্চ ও সি-বোট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আর রোরো, কে-টাইপ ও ট্রাম ফেরি বন্ধ থাকায় শিমুলিয়া ও কাঁঠালবাড়ী প্রান্তে আটকে আছে প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক বরকত উল্লাহ ফেরি বন্ধের খবর নিশ্চিত করেন।
বরকত উল্লাহ জানান, গতকাল সকাল থেকেই নৌপথে ১৪টি ফেরি চলাচল করছিল। লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে নাব্যতা সংকট ও চ্যানেলে ড্রেজার বসানোর কারণে ফেরি বন্ধ রাখা হয়। ফেরি বন্ধের কারণে ঘাট এলাকায় পারাপারের জন্য ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক যানবাহন অপেক্ষা করছে।
ড্রেজার মেশিন না সরানো পর্যন্ত ফেরি চালু হচ্ছে না বলে জানান বিআইডব্লিউটিসির এই কর্মকর্তারা। শিমুলিয়া প্রান্তে অবস্থানরত যানবাহনগুলোকে বিকল্প রাস্তায় যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে পরিবহনের চাপ সামাল দিতে এ নৌ-রুটে নিয়মিত চলাচল করছে তিনটি রোরো ফেরি ও একটি কে-টাইপ ফেরি। সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরি ‘ক্যামেলিয়াকে’ সে ঘাটে পাঠানো হয় এবং চাঁদপুর-হরিণাঘাটের নৌ-রুটে পাঠানো হয় ‘করবী’।
বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, বেশ কিছুদিন ধরে নৌরুটের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখে একটি ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানির সঙ্গে ক্রমাগত পলি পরে ডুবোচরটি দিন দিন বড় হতে থাকে।
এতে চ্যানেলের মুখে বড় রকম একটি ডুবোচরের কারণে ফেরি চালকরা প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতো। ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকতো।
বিআইডব্লিউটিএ-কে বিষয়টি অবহিত করলে তারা চ্যানেলটি কিছুতেই চালু করতে পারেনি। বাধ্য হয়ে এ রুটের ড্রাম ও রোরো ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সাড়ে পাঁচ ফিট ড্রাফের বেশি লোড নেয়া হচ্ছে না। ফেরিগুলোতে তাই এ রটে চলাচলে ভাড়ি যানবাহন, পণ্যবাহী ট্রাক ও পরিহনগুলোকে অন্য বা বিকল্প পথে যাতায়াতের জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটির উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, বর্তমানে ছয়টি ড্রেজার চ্যানেলের পলি অপসারণের কাজ করছে। তবে স্রোতের কারণে ড্রেজিং করতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া চ্যানেলের লুজ পলিমাটি বেকু দিয়ে অপসারণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আরমান হোসেন জানান, নাব্যতার কারণে এ নৌ-রুটে ফেরিগুলো সীমিত পরিসরে চলাচল করছে। কিন্তু লঞ্চ ও সি-বোটে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।