Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাজনৈতিক দলগুলো কি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:৩৩ PM
আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫২ PM

bdmorning Image Preview


মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন।।

একদিন পরেই মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের বয়সের সাথে পালিত হবে ৪৮তম বিজয় দিবস। ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের মধ্যে। দুই গোষ্টির মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে একটি অভিন্ন দেশ গঠনের লক্ষে। জন্ম হয়েছে স্বাধীন ভূখণ্ডের। কিন্তু স্বাধীনতার পরে এই বাংলাদেশটাই যে ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারি সংগঠন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, আরেকটি অংশ জাতীয়তাবাদের চেতনার বিশ্বাসী বিএনপিকে সমর্থন করে। আর বাকি অংশ আমরা আমজনতা।

আমজনতার মতামত, সমর্থন, বক্তব্য চিরস্থায়ী নয়। এরা দোদুল্যমান। যখন যাকে ভাল মনে করে, তখন তাকে সমর্থন দেয়। রাজনৈতিক দলগুলোতে এই আমজনতার বিশাল কদর আছে। কারণ ভোট ব্যাংকের বিশাল অংশ এই আমজনতা। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু আমজনতার ভোটে ক্ষমতায় এসে আমজনতার জন্যে কে কতটুকু কাজ করেছে? নির্বাচন আসলেই ১৫-২০ দিন থাকে আমজনতার কদর বাড়ে। মাঠে ঘাটে দাপিয়ে বেড়ায় রাজনৈতিক নেতারা। শুধু একটি ভোটের জন্যেই আমজনতার ঘামাক্ত শরীরের ঘাম নিজের শরীরে মাখতেও ইতস্তবোধ করেন না তারা। আহ, কি ভালোবাসা!

কত গুরুত্ব সাধারণ মানুষের! এই গুরুত্ব যে মন থেকে আসে না শুধু ভোটে জেতার জন্যেই আসে আমজনতা সেটি বার বারই ভুলে যায়। তাই নির্বাচনী লড়াইয়ে জেতার জন্যে জনপ্রতিনিধিরা আমজনতার সাথে অভিনয়ে উর্ত্তীণ হয়ে যান। ভুলেও যান তাড়াতাড়ি। নির্বাচন শেষ আমজনতার গুরুত্বও শেষ। পাঁচ বছরের জন্যে সোনার হরিণ হয়ে যান নির্বাচিতরা। যার ভোটে তিনি জনপ্রতিনিধি তার সাথে দেখা করার সময় থাকে না তার। এই পাঁচ বছরে পাঁচ মিনিটের জন্য কেউ এই আমজনতা কাছে ছুটে যায় না।

আসলে সাধারণ জনগণ কি চায় সেটিই ধরতে পারেন না অনেক রাজনীতিবিদ। আমজনতা তো বেশি কিছু চায় না তাদের কাছে। শুধু একটি নিরাপদ জীবন চায়, নিরাপদ সড়ক চায়, বৈষম্যহীন একটি মানবিক বাংলাদেশ চায়। এটাইতো আমজনতার চাওয়া। আরেকটু বেশি করে চাইলে তারা হয়তো বলবে, রাস্তাঘাট সুন্দর চাই, বৃষ্টিতে জলজট মুক্ত চাই, ড্রেনের নোংরা রাস্তায় গড়িয়ে আসবেনা এমন প্রতিশ্রুতি চাই। ইত্যাদি ইত্যাদি...।

কিন্তু এইসব প্রতিশ্রুতি কি কোন জনপ্রতিনিধি আজ আমজনতাকে দিতে পারবেন? পারবেন না কারণ যদি এই প্রতিশ্রুতিগুলো জনপ্রতিনিধিরা দেন তাহলে তাদের সম্পদ বেড়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ কখনোই হবে না। তাই নির্বাচনে এমন একটি ইশতেহার অন্তত আমজনতার জন্যে থাকা দরকার যেখানে এইসব প্রতিশ্রুতি থাকবে যে, গরীবের হক কোন এমপি- মন্ত্রী মেরে খাবে না। আর তারা গরীবের সম্পত্তি মেরে খেলে, বিদেশে অর্থ পাচার করলে, তাদেরকে বিচারেও আওতায় আনা হবে।

দেশে বর্তমানে ৪ কোটি ২০ লক্ষ তরুণ বেকার এবং নতুন তরুণ ভোটারের সংখ্যাও অনেকটা এমন। তাদের চাওয়া পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। শুধুই প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন না করলে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতেও হবে। রক্তারক্তির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রতিপক্ষের উপর দমনপীড়িনও বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতা থাকতে হবে। একে অপরকে সম্মান করতে হবে। চিন্তার মুক্তি দিতে হবে। তরুণরা সকল রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশা করে।

বিশ্বজিৎ কোন রাজনীতি করতো না, কিন্তু শুধুই রাজনৈতিক কোন্দলে আমরা বিশ্বজিৎকে হারালাম। এদেশে বিশ্বজিৎ এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বাধীনতা ৪৭ বছর ধরে আমরা হাজারও বিশ্বজিৎকে হারিয়েছি। এসব কখনো কি থামবে না? আগুন সন্ত্রাস ও হাঁতুড়ি সন্ত্রাস নির্মুলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে কার কি কি অঙ্গিকার থাকবে তাও জাতি জাতি দেখার অপেক্ষায়। এই প্রজন্ম একটি মানবিক বাংলাদেশ চাই। পাবো কি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মানবিক বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি?

লেখক: যুগ্ম আহবায়ক, কোটা সংস্কার আন্দোলন।

বি.দ্র এই লেখার দায়ভার লেখকের সম্পুন্ন নিজের। কোন ভাবেই এডিটরিয়াল বোর্ড এর দায়ভার নিবে না।

Bootstrap Image Preview