Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জনতার ইশতেহারে জনদাবি...

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৬ PM
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার তৃনমূল পর্যায়ের জনতার দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) কলাপাড়া প্রেসক্লাবে এ কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আভাস ও একশন এইড বাংলাদেশ সহযোগিতায় রিফ্লেকশন একশন দল, উপকূলীয় জনকল্যান সংঘ, কৃষক মৈত্রী, গণ-গবেষণা দল ও চম্পাপুর যুব উন্নয়ন ক্লাব এ কর্মশালার অয়োজন করে।

উপজেলার তৃনমূল পর্যায়ের সংগঠন এ পাচটি সংগঠনের পক্ষে এসময় বক্তব্য রাখেন গণ-গবেষণা দলের সভানেত্রী হাওয়া বেগম, উপকূলীয় জন কল্যান সংঘের নারী নেত্রী সবিতা রানী ও সভাপতি জয়নাল আবেদীন, কৃষক মৈত্রী এর সম্পাদক মর্জিনা বেগম, রিফ্লেকশন একশন দলের নেত্রী রাজিয়া ও সুগন্ধা রানী, চম্পাপুর যুব উন্নয়ন দল রাব্বি মোল্লা, ঈশিতা।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রেসক্লাবের সম্পাদক মহসিন পারভেজ, সাংবাদিক জীবন মন্ডল, আভাস ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম। সকল সংগঠনের প্রতিনিধি নেতৃবৃন্দসহ গনমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণ-গবেষণা দলের সভানেত্রী হাওয়া বেগম।

পাচটি সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে যেসব সুপারিশসমূহ উল্লেখ করা হয়েছেঃ

কৃষি জমির মধ্যে যে খালগুলো আছে মৌজা নকশা অনুযায়ী সে সব খাল পুন:রুদ্ধার করতে হবে এবং যে সকল খাল অবৈধভাবে দখলে আছে তা উদ্ধার করতে হবে। সর্বোপরি এই সকল ভরাট খালগুলো কৃষকের স্বার্থে খনন করে দিতে হবে এবং খনন প্রক্রিয়া শুরুর সময় কাজের পর্যবেক্ষন কমিটিতে কৃষকদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের দ্রুত, শক্ত ও মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী বাঁধ নিমার্ণের মাধ্যমে কৃষি জমিতে লবন পানির প্রবেশ ঠেকাতে জনপ্রতিনিধিদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কেননা প্রতি বছর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়, ৬ মাস যেতে না যেতেই তা ভেঙে পড়ছে। তাই সোস্যাল অডিট টিম, কমিউনিটি মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে ও কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।

বোরো মৌসুমে কৃষদের স্বার্থে স্লুইজ ও খাল এবং কালভার্টের মুখে জাল ফেলে অবৈধ মাছ শিকারীদের এ সকল স্থানে মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে। আমাদের মত ক্ষমতাহীন কৃষকদের পক্ষে এ সকল অবৈধ মাছ শিকারীদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য চাই জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহায়তা। এ ছাড়াও বোরো মৌসুমে স্লুইজ ও খাল এবং কালভার্টের মুখে বাঁধ দিয়ে মিঠাপানি সংরক্ষনের জন্য সরকারি বরাদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে এবং এই সকল কাজ বাস্তবায়নের সময় কৃষকদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

প্রতিটি স্লুইজ ও কালভার্ট রক্ষনাবেক্ষনের জন্য পূর্বের আইন ও ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী সরকারি খালাসী নিয়োগ দিতে হবে। যাহাতে কৃষকরা তাহাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৃষি কাজের জন্য পানি ওঠানো নামানোর ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবহার করতে পারে। আগাম ও লবন সহিষ্ণু জাতের কৃষিবীজ, কৃষি-উপকরণ সকল কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সরকারিভাবে সহায়তা দিতে হবে।

ইকোনমিক জোন (তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা সামুদ্রিক বন্দর) যাদের ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদেরকে কোন জিনিসের কত মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে তা জানার জন্য অত্র এলাকায় জনসমুক্ষে দৃশ্যমান স্থানে মূল্য তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাহলে তারা প্রকৃত মূল্য পাওয়ার জন্য দাবি জানাতে পারবেন এবং কোন হয়রানীর স্বীকার হবেন না।

ইকোনমিক জোন (তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা সামুদ্রিক বন্দর) চাকরিপ্রার্থী বেকার জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এই উপজেলায় সরকারি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান চাই (আইটি, ট্রেড)। যাহাতে এই এলাকার বেকার যুবশ্রেণী ইকোনমিক জোনগুলোতে টেকনিক্যাল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

কলাপাড়া উপজেলায় নারী ও শিশু নির্যাতনের হার কমানোর জন্য কঠোর আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রুত ট্রাইবুনালে সল্প সময়ে শিশু হত্যা, নারী হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতন বিচার করে প্রকৃত অপরাধীদের সাজা দিতে হবে এবং জনস্বার্থে ইউনিয়ন এর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ ক্যাম্প বসাতে হবে। সেইসাথে  মাদক এর ব্যবহার বন্ধে আরো কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে।

ইউনিয়ন পরিষদের সামর্থবৃদ্ধির জন্য জাতীয় বাজেটের (রাজস্বের) বড় অংশ ইউনিয়ন পরিষদকে দিতে হবে। যাতে তাহারা জনগণের কাঙ্খিত সেবা দিতে পারে।

শিক্ষাখাতে বাজেটের বরাদ্ধ বাড়াতে হবে এবং কলাপাড়া উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা বাড়াতে হবে। নতুন অবকাঠামো করতে করতে হবে। শিক্ষা উপকরন ও আসবাবপত্র বরাদ্ধ চাহিদা অনুযায়ী দিতে হবে।

যেসকল ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাান কেন্দ্র নাই সেখানে  ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাান কেন্দ্র দিতে হবে। এই সকল সেবা কেন্দ্রে নারী ও কিশোরীদের জন্য মহিলা ডাক্তারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সিটিজেন চার্টারসহ ঔষধের তালিকা সেবাকেন্দ্রে প্রদর্শন করে রাখতে হবে।

গ্রামীণ জনপদের রাস্তাগুলো পাকা করতে হবে। যাতে বর্ষাকালে কোমলমতি শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে এবং অসুস্থ রোগীদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য শহরের উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হয়।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় বাজেটে জন অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের (ঔষধ, প্যাথলজি টেষ্ট, শিক্ষা ও উপকরন) উপড় ভ্যাট কমাতে হবে।

সর্বোপরি এ সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সাথে সাথে যেন কোন প্রকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি যেন না হতে পারে সেজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

Bootstrap Image Preview