বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা সেবিষয়ে যখন পাল্টাপাল্টি যুক্তি দেওয়া হচ্ছে তখন হাইকোর্টের নতুন একটি রায়ে সরকার নড়েচড়ে বসেছে। কারণ খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন পথ খুলে দিতে পারে, সাবিরা সুলতানার ব্যাপারে হাইকোর্টের দেয়া সর্বশেষ রায়টি।
কিন্তু এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, ‘সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে নৈতিক স্খলনের কারণে কেউ যদি দুই বছর কিম্বা তারও বেশি সাজাপ্রাপ্ত হন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। এমনকি মুক্তিলাভের পরেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্যে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আরো পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে ।’
বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিএনপির প্রার্থী সাবিরা সুলতানার সাজা স্থগিত করার পর এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামীকালই আপিল করার কথা ঘোষণা করেছে সরকারের পক্ষ। এ প্রসঙ্গে সরকারের এটর্নি জেনারেল বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, আদালত বন্ধ থাকার পরেও শনিবার চেম্বার জজ আদালতে এই আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেছেন, যেহেতু ২ ডিসেম্বর, রবিবার মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই এর জন্যে দিন নির্ধারিত থাকার কারণে তারা আর দেরি করতে চান না। যদি এই আদেশের সুযোগ নিয়ে তিনি নির্বাচন করেন, সেটা সংবিধানের পরিপন্থী হবে।
অন্যদিকে সাবিরা সুলতানার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম কিছু উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমান সংসদের কয়েকজন সদস্য সাজাপ্রাপ্ত হয়ার পরও তারা একইভাবে আবেদন জানালে হাইকোর্ট তাদের সাজা স্থগিত করেছিলো।পরে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা নির্বাচিতও হয়েছেন। এবং মন্ত্রীও হয়েছেন অনেকেই।’
এদিকে খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বিএনপির নেতারা আশা করছেন, তাদের নেত্রী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন এবং সেজন্যে তাকে পাঁচটি আসনে মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত সম্পদের তথ্য গোপন এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় নিম্ন আদালত বিএনপির নেত্রী সাবিরা সুলতানাকে তিন বছর করে মোট ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়। সাবিরা সুলতানা তখন এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
এরপর জামিনে থাকা অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্যে তিনি বিরোধীদল বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। দলটি তাকে যশোর ২ আসনে মনোনয়নও দিয়েছে।