Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বঙ্গোপসাগরের বুকে চর বিজয়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:৩০ PM
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:৩০ PM

bdmorning Image Preview


জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ

বিশাল এক সম্ভাবনা নিয়ে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বুকে জেগে উঠেছে এক নতুন চর। প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠা এ চরটি ইতোমধ্যে মধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের। লাল কাকড়া অবাধ ছুটোছুটি আর অতিথি পাখির কলকাকলী পর্যটকদের করে তুলেছে মুগ্ধ।

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এ চর ভ্রমণে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সমুদ্রে মৎস্য শিকারী স্থানীয় জেলেরা কাছে চরটি হাইরের চর নামে পরিচিত হলেও সৌখিন পরিব্রাজক, স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা এর নামকরণ করেছে চর বিজয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহেই পর্যটকদের দেয়া নামকেই আনুষ্ঠনিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। এ সময় তিনি চরটির স্থায়ীত্বের জন্য সংশ্লিস্টদেও নির্দেশ প্রদান করেন।

পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কুয়কাটা পৌর প্রশাসন, টুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতি, পর্যটন ব্যবসায়ীরা চর বিজয় পরিদর্শন করে। ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বাগান সৃজনে এ সময় প্রায় ২ হাজার গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপন করা হয়। দ্রুত চরটি জেগে উঠবে। সঠিক তদারকিতে তৈরি হবে একটি বাসযোগ্য নতুন সমভূমি। যাকে ঘিরে কুয়কাটার পর্যটন শিল্পে তৈরি হবে আরেক ভিন্ন মাত্রা। এমন সম্ভবনার কথা তুলে থরেন সংশ্লিস্টরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর অভ্যান্তরে অবস্থিত এ চরটি। কুয়াকাটার সৈকত থেকে টুরিস্ট বোট নিয়ে মাত্র দেড় ঘন্টায় পৌঁছানো যায় এ চর বিজয়ে। বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস চরটি হাটু পানিতে ডুবে থাকে। শীত মৌসুমে ধু ধু বালু নিয়ে জেগে উঠে। এ সময়ে তিন/চার মাসের জন্য অস্থায়ী বাসা তৈরি করে মাছ শিকার এবং শুটকি তৈরি করে জেলেরা। মানুষের খুব একটা বিচরন নেই বলে শীতে এখানে সমাগম ঘটে কয়েক লক্ষ অতিথি পাখির। আবার শীত কমে আসলেই চলে যায় যে যার আপন দেশে।

চরটি ঘুরে এসে পর্যটক লুৎফুল হাসান রানা জানান, চারদিকে সাগরের অথৈই পানি। এরই মাঝে আকাশ আর মাটির সাথে মিতালী তৈরি করেছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা নতুন চর বিজয়। লাল কাঁকড়া আর অতিথি পাখির অবাধ বিচারন তৈরি করেছে প্রকৃতির এক নান্দনিক সৌন্দর্য। এখানে যে কেউ আসালেই ভাল লাগবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি জনি আলমগীর বলেন, সমুদ্র মাঝে সুন্দর এ চরটিকে এখন সরকারি-বেসরকারিভাবে ব্রাডিং করে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এতে ভ্রমণ পিয়াসুদের কাছে কুয়াকাটার পর্যটন আরো বেশি আকর্ষণীয় হবে।

কুয়কাটা টুরিস্ট সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়কাটায় আগত বেশির ভাগ পর্যটকের এখন আকর্ষণ চর বিজয় ভ্রমণ। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন লাভবান। পর্যটকরা পাচ্ছেন এক ভিন্ন এডভেঞ্চার বিনোদন।

মহিপুর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, চরটির প্রকৃত আয়তন পরিমাপ করে পর্যায়ক্রমে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের আওতায় আনা হবে। পশুপাখির আভায়ারণ্য গড়ে তোলা হবে। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় চর বিজয়ে গোল, ছাইলা, কেওয়া ও সুন্দরী গাছের চারা রোপন করা হয়েছে।

কুয়াকাটা টুরিষ্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, চরটিতে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে নৌ-পুলিশকে সাথে নিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নিরপত্তা দেয়া হচ্ছে। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা বলেন, চর বিজয়ে পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview