Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও !

জাহিদ হাসান মিমপা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৪৫ AM
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৪৫ AM

bdmorning Image Preview


চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিয়াম শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও গ্রাহকের প্রায় ৫৫-৬০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এনজিওটির হেড অফিস ও শাখা অফিসে বর্তমানে তালা ঝুলছে। মালিক ও কর্মচারীরাও বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। শহরের বড় ইন্দারা মোড়ে এনজিওটির প্রধান অফিস। এ ছাড়াও মহারাজপুর, নেজামপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ছিল শাখা অফিস।

শনিবার রাতে ও রবিবার সকালে সরেজমিনে বারঘরিয়া লক্ষীপুর সিয়ামের অফিসে গেলে দেখা যায় শতাধিক গ্রাহক অপেক্ষায় রয়েছে তাদের জমাকৃত টাকা তোলার জন্য। তাদের ভেতর সিয়ামের বৃদ্ধ এক গ্রাহক সফেদা বেগম জানান, সিয়ামের এককর্মী কিছুদিন আগে আমার বাড়িতে এসে বলে, ১ লাখ টাকা জমা দিলে তাকে প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে লাভ দেবার কথা বলা হয়। তিনি আরো বলেন, বেশি টাকা পাবার আশায় আমার ছেলের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা জমা দেই। আজ শনিবার সে টাকার লভ্যাংশ দেবার কথা ছিল। আরেক গ্রাহক জাইদুল ইসলামও একই ভাবে টাকা দিয়ে আজ সে সর্বশান্ত। এমনি ভাবে বারঘরিয়ায় হাজার হাজার মানুষ আজ পথে বসে বসার উপক্রম হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিয়াউর রহমান পিপিএম জানান, শুক্রবার রাতে সিয়ামের এক ম্যানেজার থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দিয়ে গেছেন। আমাদের তরফ থেকে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষেই জানা যাবে আসল ঘটনা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ ফাড়ির ইন্সপেক্টর আব্দুল হান্নান এ ঘটনার তদন্তে রয়েছেন। তিনি জানান, অভিযোগ পাবার পরে আমি টিম নিয়ে বারঘরিয়া এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে সিয়ামের অফিসে তালা ঝুলতে দেখতে পায়। আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিলে তারা জানায়, অফিস বন্ধ করে সকলে পালিয়ে গেছে সিয়ামের লোকজন। স্থানীয় যারা সিয়ামে কাজ করত তারাও পরিবার নিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। বর্তমানে সিয়ামের প্রতিটি ইউনিট কার্যালয়ে তালা ঝুলছে।

বারঘরিয়া ইউনিয়দ পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল খায়ের জানান, সিয়ামের পরিচালক মাসুদ রানা বর্তমানে ভারতে পালিয়ে গেছে এমটাই শোনা যাচ্ছে। তারা গ্রাহকের প্রায় ৪৯ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এলাকার অসহায় গরীব মানুষ আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, মাসুদ রানার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেউ কেউ রিসিভ করেনি। আর আরেকটি নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

রবিবার সকালে বারঘরিয়ায় আমির মেকার, নাজমুল, দুরুল ঘোষ, বিভুতি রায়, শোভনসহ আরো অনেকে অফিস ঘিরে রেখেছিল। তারা সকলে সাংবাদিক দেখে সকল অভিযোগ জানায়। তারা জানায় যার কাছে যেভাবে পেরেছে টাকা নিয়েছিল। অল্প টাকায় বেশি মুনাফা পাবার আশায় তারা সিয়ামে টাকাও জমা দিয়েছিল। টাকা ফেরত দেবার মূহুর্তেই এখন সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী সিয়ামের পলাতক। এ বতৃমানে বারঘরিয়াসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে টক অব দ্য টাউন। সবার মুখে মুখে একটাই কথা সাধারণ গরীব খেটে খাওয়া মানুষের টাকা নিয়ে যারা পালিয়ে গেল তাদের যেন সঠিক বিচার হয়। সরকারের কাছেও ভুক্তভোগিদের দাবি এমন প্রতারণার হাত থেকে যেন তাদের রক্ষা করা হয়। তা না হলে শত শত পরিবার ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে পথে বসতে হবে।

এ ব্যাপারে সিয়াম শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুদ রানার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার পরিবারের কাউকেও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার যেন সুষ্ঠ তদন্ত হয় এটাই প্রত্যাশা ভূক্তভোগীদের এখন।

Bootstrap Image Preview