Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিদ্যালয়ে ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গাতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৫৫ PM
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গানোর সময় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ ৪ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।

গত মার্চ মাসে উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে বিষয়টি কিছু দিন আগে লোখমুখে জানাজানি হয়। এ নিয়ে ওই স্কুলে ব্যাপক বিঃশৃংখলার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলের কিছু শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীসহ স্থানীয়রা। 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) এ বিষয়ে সুষ্ট তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাণীনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রদান করেন।  

স্কুল, স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধাননমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিগুলো পুরাতন হয়ে গিয়েছিলো। ছবিগুলো পুরাতন হওয়াই প্রধান শিক্ষক দুইটা নতুন ছবি কিনে আনে ও পুরাতন ছবি সেখান থেকে খুলে নতুন ছবিগুলো টাঙ্গিয়ে দেন। পরে স্কুলের মো: আব্দুর রহমান পিয়নকে পুরাতন ছবিগুলো ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে টাঙ্গাতে বলেন। 

প্রধান শিক্ষকের অনুমতিতে স্কুলের পিয়ন সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গাতে গেলে পিয়নকে বিভিন্ন অজুহাতে সেখানে ছবি ঠাঙ্গাতে দিবেনা বলে বাঁধা প্রদান করে ওই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলীসহ মোট ৪ জন শিক্ষক। সেই দিনেই ওই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে জোর করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙ্গিয়ে দেয়। 

এরপর থেকে ব্যাপক বিঃশৃংখলা সৃষ্টি হয় স্কুলে। বিষয়টি জানাজানি হলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের প্রতি অসৎ আচরণসহ কারণে অকারণে  বিরুদ্ধচারণ করছেন এই শিক্ষকরা। এতে করে স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন অবিভাবকসহ স্থানীয়রা।

শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী: হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, বিদ্যালয়ে আমার অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি পুরাতন হয়ে গিয়েছিলো। তাই আমি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর দুইটা নতুন ছবি কিনে আনি এবং আমার কক্ষের পুরাতন ছবিগুলো খুলে নতুন ছবি টাঙ্গিয়ে দেই। পরে পুরাতন ছবি দুইটা আমাদের সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে টাঙ্গিয়ে দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের পিয়ন মো: আব্দুর রহমানকে দেই। পিয়ন সেখানে ছবিগুলো টাঙ্গাতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে সেখানে ছবি টাঙ্গাতে দিবে না বলে বাঁধা সৃষ্টি করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলীসহ ৪ জন শিক্ষক।

এছাড়াও আমার সাথে অসৎ আচরণসহ কারণে অকারণে বিরুদ্ধচারণ করছেন তারা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি। এ ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৮ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবার একটি লিখিত অভিযোগ করেছি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি প্রদান করি।

শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন মো: আব্দুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষকের অনুমতিতে আমি সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রীর ছবি দুটো টাঙ্গাতে যাই। ছবি টাঙ্গাতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম, মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান, মো: আলতাব আলী শিক্ষকরা ছবি টাঙ্গাতে দিবে না বলে বাঁধা দেয়।

বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রীর ছবি টাঙ্গানোর সময় বাঁধা প্রদান করার বিষয়ে অভিযুক্ত শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: শামিমুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো: শফিউল ইসলাম, মো: খাইরুজ্জামান ও তাদের সহযোগী মো: আলতাব আলীসহ সব শিক্ষকের কাছে মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা সবাই বলেন, এটা মিথ্যা। আমরা কোন বাঁধা দেইনি।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল জলিল বলেন, আমি লিখিত অভিযোগটি হাতে পাইনি। তবে বিষয়টি আমি মৌখিক শুনেছি। যদি এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুন বলেন, প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি তার অনুলিপি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview