Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লালন প্রেমে বাংলাদেশে সংসার গড়লেন ফরাসি তরুণী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:০৫ PM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:০৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


২০১৬ সালে বাংলাদেশে আসার পর বাউল সম্রাট লালন শাহ-এর জীবনদর্শন নিয়ে গবেষণা করতে আসেন ফ্রান্সের নাগরিক দেবোরা কিউকারম্যান। লালন দর্শনের প্রেমে পড়ে যান দেবোরা। আত্মিক শান্তির উদ্দেশ্যে এদেশে এসে গুরুর কাছে দীক্ষা নিয়েছেন। বাউলদের এই জীবনাচারে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছেন তিনি।

জানা যায়, দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। দেবোরা একজন ভালো ট্রান্সলেটর। দেশে থাকাকালীন ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের কাজও করেছেন। শুধু তাই নয়, দেবোরা দর্শনে এমএ করেছেন। ফ্রান্সে ইয়োগার শিক্ষক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাউল সম্রাট লালন শাহ-এর কথা শুনে কাছ থেকে লালনের জীবন ও দর্শন উপলব্ধি করার জন্য ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম বাংলাদেশে আসেন দেবোরা। এরপর থেকে বসবাস করছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। এর মধ্যে কয়েকবার ফ্রান্সে গেছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর বেশি দিন থাকতে পারেননি। কয়েকদিন পরই লালনের প্রেমের টানে আবারও ফিরে এসেছেন লালন ধামে। ফিরে এসে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন এই তরুণী। নাম বদলে হয়েছেন দেবোরা জান্নাত।

দেবোরা জান্নাতের বিষয়ে ফকির নহির শাহ বলেন, ফ্রান্স থেকে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আসেন জান্নাত। সত্যের সন্ধানে পৃথিবীর প্রায়ই ১৫টি দেশ ঘুরে অবশেষে বাংলাদেশে এসেছেন। লালন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করায় একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয়। পরবর্তীতে দুই সপ্তাহব্যাপী সাধুসঙ্গ করেন। লালন দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করেন। তারপর তিনি লালন দর্শনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। লালন দর্শন সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে চাইলে আমি তাকে বাংলা ভাষা শেখার কথা বলি। জান্নাত বাংলা ভাষা শেখার পর তার সঙ্গে আমার ভাব-বিনিময় হয়। আমার দর্শনজ্ঞান ধীরে ধীরে তার মধ্যে দেয়া শুরু করি এবং এখন লালন শাহ-এর দেখানো পথের অনুসারী করি।

এ বিষয় দেবোরা জান্নাত বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম লালনের দেশ কুষ্টিয়ায় আসি। লালনের গবেষণার জন্য এসে আমি আর ফিরে যেতে পারিনি। মায়া পড়ে গেছে। প্রথমে আমি বাংলা ভাষা জানতাম না। কিন্তু ভাষা না জানলেও আমি গুরুজির সঙ্গে সাধুসঙ্গতে গেলাম। সাধুসঙ্গতে গিয়ে সেখানকার শৃঙ্খলা ও ভাব-বিনিময়ের মধ্যে যে লালন দর্শন পেলাম সেখানে ভাষা কোনো বিষয়ই ছিল না।

জান্নাত আরও বলেন, লালন সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকেই কুষ্টিয়ায় আসা। গুরুজি নহির শাহ-এর কাছ থেকেই শিষ্যত্ব নিয়েছি। আমৃত্যু সাধুসঙ্গ নিয়ে বাংলাদেশে থাকতে চাই।

ফ্রান্সে আর ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে জান্নাত বলেন, আমি শান্তি খুঁজে পেয়েছি এদেশে, এই লালনের প্রেমে। তাই আমি আর ফিরে যাবো না ফ্রান্সে।

Bootstrap Image Preview