একটা সময় স্বামী সংসার সবই ছিল, অভাব ছিল না কোনো কিছুর। সুখেই দিন পার হতো ময়নার। হঠাৎ একটা রোগই কেড়ে নেই তার সকল সুখ। হাসপাতালে প্রায় দুই বছর ধরে পরে ছিলেন তিনি। অবশেষে চিকিৎসাধীন অসহায় ময়নার চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন।
রবিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় চিলমারী হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ ময়নার খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন অসুস্থ ময়নাকে দেখতে যান। এ সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসনের জন্য ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক।
এ সময় জেলা প্রশাসকের সাথে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জিলুফা ইয়াসমিন, চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার (বীরবিক্রম), সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, ময়না বেগমের অসুস্থতার খবর পেয়ে দেখতে যাই। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। সেইসঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ময়নার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ময়না সুস্থ হলে তার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান মুকুল বলেন, বর্তমানে ময়না বেগম অনেকটা সুস্থ। জেলা প্রশাসকের প্রতিশ্রুতিতে দু-একদিনের মধ্যে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
জানা যায়, ময়না বেগম জটিল ও কঠিন রোগে ভুগছিলেন। ময়নার স্বামী তারেক রহমান দুই বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে আর একমাত্র ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দেবে। চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের গয়নার পটলচরে থাকা ময়নার বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে অসুস্থ ময়না বেগমকে তার দিনমজুর ভাই আব্দুল গফুর আশ্রয় দেন। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে কিছুদিন পর ময়নার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেন তার ভাই।