যশোরের মণিরামপুরে স্বামী গোলাম রসুলের পরকীয়ার সম্পর্কে বাঁধা দেয়ায় শিল্পী খাতুন নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নিহতের দিনমজুর পিতা রহমান দফাদার৷ শিল্পীর স্বামী তাকে মারধরে করে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের পাড়দীয়া গ্রামের দিনমজুর মিজানুর রহমান দফাদারের মেয়ে শিল্পী খাতুনের ২০০৯ সালে চালুয়াহাটি ইউনিয়নের গোপিকান্তপুর গ্রামের মোজাম আলী গাজীর ছেলে গোলাম রসুলের বিয়ে হয়। তাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। পরে গোলাম রসুল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন৷ পরকীয়ার বিষয়টি জানাজানির পর বাঁধা হয়ে দাড়ায় শিল্পী৷ এজন্য গোলাম রসুল প্রায়ই শিল্পীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
নিহতের বাবা অভিযোগ করে জানায়, তার মেয়েকে হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে গোলাম রসুল এলাকায় একে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পেয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামাতা গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করেনি৷ ফলে মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে শিল্পীর পিতা প্রশাসনসহ এলাকার প্রভাবশালীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইউনুস আলী জানান, এ ব্যাপারে স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকবার শালিস করা হয়৷ গোলাম রসুল প্রতিবারই শালিসসভায় অঙ্গীকার করে স্ত্রীকে আর নির্যাতন না করার জন্য৷ কিন্তু সেই অঙ্গীকার গোলাম রসুল রাখেনি৷
এরই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর বেলা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাধে। এসময় গোলাম রসুল শিল্পীকে মারধর করে৷ এতে অচেতন হয়ে পড়েন শিল্পী৷ এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর শিল্পীর লাশ ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে। একে এলাকায় আত্মহত্যা বলে প্রচার করে।
এ ঘটনায় নিহত শিল্পীর পিতা বাদী হয়ে গোলাম রসুল ও তার পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলার জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেন৷ কিন্তু পুলিশ মামলা রেকর্ড না করে অপমৃত্যু মামলা উল্লেখ করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এদিকে অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল জলিল জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷