ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জেল আহম্মেদ ৪ মাস ধরে নিখোঁজ। ফলে স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছে চাঁদা দাবি, শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা, প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়া এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও অপকর্মের অভিযোগ ওঠায় তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে উপজেলা প্রশাসন।
স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসমান গণি যথাযথস্থানে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর একটি কপি দেওয়া হয় যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে। কিন্তু চার মাস অতিবাহিত হলেও যশোর শিক্ষাবোর্ড কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আর এই সুযোগে সংখ্যালঘু প্রধান শিক্ষক উপানন্দ কুমার মন্ডলের সন্তানদের গুম করার হুমকি দিচ্ছে সভাপতি তোফাজ্জেল। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানায় জিডিও করেছেন প্রধান শিক্ষক।
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সভাপতি তোফাজ্জেল আহম্মেদ গত ২৩ এপ্রিল শিক্ষকদের লাঞ্চিত করেন। প্রতিবাদে ২৪ এপ্রিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে সভাপতির বিচারের দাবিতে তার বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করে আন্দোলন করে।
এ ঘটনার পর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতিসহ উপজেলার সকল শিক্ষক ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অভিযুক্ত সভাপতির শাস্তি দাবি করেন। এদিকে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন সহকারী শিক্ষককে লাঞ্চিত করার ঘটনায় সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক উপানন্দ কুমার মন্ডল বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলা হওয়ার পর থেকে সভাপতি লাপাত্তা রয়েছে।
এ ঘটনার ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ উসমান গনি ২৫ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণ পায়। বিদ্যালয়ে সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শৈলপুার ইউএনও উসমান গণি যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর সভাপতির অপসারণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। কিন্তু প্রায় চার মাস অতিবাহিত হলেও সভাপতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি যশোর শিক্ষা বোর্ড।
প্রধান শিক্ষক উপানন্দ কুমার মন্ডল জানান, তিনি বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় পরিদর্শকের নিকট একাধিকবার গিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। নতুন সভাপতি নিয়াগ না হওয়ায় শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে।