চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারায়নপুর ইউনিয়নে অব্যাহত পদ্মার ভাঙ্গনে, মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে নারায়নপুর ঘোন ও সোনারদি চর। এ দুই গ্রামে শতাধিক পরিবার ভিটে মাটি হারিয়ে এখন অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে কোন রকমে দিনাতিপাত করছেন। অব্যাহত ভাঙ্গনে তা আজ যেন জলরাশির মধ্যে একটু জেগে থাকা দ্বীপের মত।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নারায়নপুর ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের নারায়নপুর ঘোন ও সোনারদিচরের এ ২টি গ্রাম একসময়ে বেশ সমৃদ্ধ ছিল। পরিবারগুলো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছিল। অব্যাহত ভাঙনে এ গ্রামের শত শত বিঘা ফসলি জমি ও গাছপালা সবই নদীতে বিলীন হয়েছে।
সেই সাথে ফিকে হয়েছে পরিবারগুলোর সব স্বপ্ন। ভিটে মাটি হারানো পরিবারগুলো পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে চলে গেছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে যেন দিন দিন ছোট হচ্ছে এ ইউনিয়নটি। গত ১৫ বছরে ইউনিয়নের বাতাসি মোড়, খলিফার চর, ডাকাতপাড়া অনেক এলাকায় পদ্মার ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। চারদিকে অথৈই পানিতে দ্বীপের মত দাঁড়িয়ে থাকা নারায়নপুর ঘোন ও সোনারদি চরে বর্তমানে থাকা প্রায় ২'শ ৫০ পরিবার আতঙ্কের মধ্যেই দিন পার করছে।
নারায়নপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আজিম উদ্দিন জানান, নারায়নপুর ঘোন ও সোনারদি চরের ভাঙ্গনের কবলে পড়া মানুষগুলো বাধ্য হয়েই পূর্বপুরুষরা ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে, কিন্তু একসময় এ চরে প্রায় ২'শ পরিবার স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতো।
বর্তমানে নারাযনপুর ঘোন গ্রামে ২'শ পরিবার ও সোনারদি চরে মাত্র ৬০ টি পরিবার রয়েছে। এখনও যারা আছে তাদের দিন কাটছে ভাঙ্গন আতঙ্কের মধ্যে। তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা খুবই প্রয়োজন। ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলিম ও মোমিন শরীফ জানান, বেশ কয়েক বছর থেকে এ ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। আর ভাঙ্গছে গ্রামগুলো।
১০৪ নং সূর্যনারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবী হোসেন জানান, এক সময় শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখর ছিলো এ বিদ্যালয়টি, তা যেন এখন ভাঙ্গনের হাতছানি দিচ্ছে। তাই বিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন ইতিমধ্যে ভাঙ্গন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।