Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চলচ্চিত্রে যৌন দৃশ্যের নির্দেশনা দেন যিনি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ মে ২০২১, ০২:০৯ PM আপডেট: ০২ মে ২০২১, ০২:০৯ PM

bdmorning Image Preview


১৯৯২ সালে নির্মিত হয় ব্যাসিক ইন্সটিঙ্কট সিনেমা। সে সিনেমা নির্মাণকালে একটি দৃশ্যে অভিনয়ের সময় অভিনেত্রী শ্যারন স্টোনের সঙ্গে চালাকি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই দৃশ্যে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি তার এক পায়ের ওপর আরেকটি পা তুলে বসেছিলেন এবং এক পর্যায়ে তিনি একটি পা তুলে নেন।

এই দৃশ্যটি ধারণ করার আগে তাকে চালাকি করে আন্ডারওয়্যার খুলে ফেলতে বলা হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে ‘সেখানে আলো প্রতিফলিত হবে’ এবং তাতে দর্শকরা ‘কিছু দেখতে পারবে না’ বলে তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনিসহ সারা বিশ্বই দেখল যে তারা আসলে অনেক কিছুই দেখতে পারছে।

ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা কি কোনোভাবে এড়ানো সম্ভব ছিল? প্রশ্নের জবাবে আস্থা খান বলেছেন, হ্যাঁ, খুব সহজেই। তিনি ভারতের প্রথম এবং একমাত্র ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর যিনি চলচ্চিত্রে অন্তরঙ্গ দৃশ্যের নির্দেশক হিসেবে কাজ করেন।

তিনি বলেন, আমি যদি সেখানে থাকতাম আমি তাকে গায়ের রঙের সঙ্গে মিলে যায় এরকম একটি আন্ডারওয়্যার দিতাম পরার জন্য।

২০১৮ সালে তাদের দ্য ড্যিউস সিরিজের জন্য এই প্রথম এরকম একজন ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর নিয়োগের কথা ঘোষণা করে চলচ্চিত্র নির্মাণকারী নেটওয়ার্ক এইচবিও। এই সিরিজটি ১৯৭০ এর দশকে নিউ ইয়র্কের যৌন ও পর্ন শিল্পের ওপর নির্মিত। অভিনেত্রী এমিলি মিডের অনুরোধে ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর হিসেবে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর থেকে অনেক স্টুডিও, প্রযোজক এবং পরিচালক তাদের সেটে দৃশ্য ধারণের সময় ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরদের কাজে লাগাচ্ছেন। ভারতেও কয়েক মাস আগে এই পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে।

ভারতের ২৬ বছর বয়সী ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর আস্থা খান্না বলছেন, তার চাকরিকে একজন অ্যাকশন পরিচালক এবং একজন নৃত্য পরিচালকের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে- যিনি কাজ করবেন সিনেমায় অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণের বিষয়ে।

একজন ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরের কাজ হচ্ছে যেসব দৃশ্যে নগ্নতা, সেক্স ও যৌন সহিংসতার মতো বিষয় রয়েছে সেসব দৃশ্যে যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। একজন ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর পরিচালক ও অভিনেতা অভিনেত্রীদের মধ্যে সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করেন।

একই সঙ্গে তিনি তাদের কিছু পোশাক আশাকও সরবরাহ করেন। আরো যেসব জিনিস সরবরাহ করেন তার মধ্যে রয়েছে তলপেটের নিচের জায়গার নিরাপত্তা দেয় এরকম গার্ড, স্তনের নিপলের জন্য আবরণ, আঠাল বডি টেপ এবং ডোনাটের মতো দেখতে এক ধরনের বালিশ যা পারফর্মারদের মাঝখানে রাখা হয় যাতে সেক্স করার দৃশ্যে অভিনয়ের সময় তাদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ না করে।

অঞ্জলি সিভারামান একজন মডেল ও অভিনেত্রী, সম্প্রতি তিনি নেটফ্লিক্সের একটি সিরিজেও অভিনয় করতে শুরু করেছেন। তিনি বলেছেন, সেটে আস্থা খান্নার উপস্থিতির কারণে তিনি অনেক বেশি স্বস্তি পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাকে একটি সেক্স দৃশ্যে অভিনয় করতে হচ্ছিল যা আমি এর আগে কখনো করিনি। আস্থা আমার জন্য এই কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছেন। সেক্সের দৃশ্যের সময় তিনি আমাদের মাঝখানে একটি ডোনাট বালিশ রাখেন ফলে আমাদের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করেনি।

এ বিষয়ে বলিউড তারকা এবং নির্মাতা পূজা ভাট বলেন, তার অভিনয় জীবনের শুরুতে তার মা অথবা ম্যানেজাররাও তার সঙ্গে সেটে যেতেন যারা একধরনের ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরের মতোই ভূমিকা পালন করতেন।

তবে আস্থা খান্না বলেছেন, তাকে যে সবসময় সবাই স্বাগত জানায় তা নয়। এর পেছনে একটা মৌলিক কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। এছাড়াও অনেক প্রযোজক ও পরিচালক কখনও কখনও মনে করেন যে, তিনি হয়তো তাদের পায়ে পারা দেবেন।

তার ভাষ্য, পরিবর্তন হচ্ছে, তবে ধীরে। এই শিল্পে অল্প কিছু লোক আছেন যারা সেকেলে, মাথা মোটা এবং নিজেদের পরিবর্তন করতে চান না। কিন্তু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আহত করার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে একজন আরেকজনের জন্য দাঁড়াতে হবে, সমর্থন দিতে হবে। সূত্র : বিবিসি

Bootstrap Image Preview