Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফায়ার সার্ভিসের সুবিধা বিবেচনা রেখেই সাজাতে হবে আবাসন প্রকল্প: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০১:৫১ PM
আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০১:৫১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


অগ্নি দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা যেন সহজে ঘটনাস্থলে যেতে পারেন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত হয় সে কথা বিবেচনায় রেখে ভবন বা আবাসন প্রকল্প সাজানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের ২৫টি জেলার বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার স্টেশন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রকৌশলী, স্থপতিদের প্রতি তিনি এই অনুরোধ জানান।

রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরে মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গণভবন থেকে ওই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন ও ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো, সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ার… যারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রজেক্ট তৈরি করেন, তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে এমনভাবে প্রকল্প তৈরি করতে হবে যেন ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ সুবিধা থাকে, সে বিষয়টা দেখতে হবে।অর্থাৎ তাদের গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা যেন থাকে, পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয় এবং জলাধারগুলোতে যেন বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।’

ভবন ও আবাসিক প্রকল্প ডিজাইনের সময় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা কতটা আধুনিক তা যাচাই করার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এখন অনেকেই ৩০-৪০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এমনভাবে প্ল্যান করতে হবে যে আগুন যদি লাগে তাহলে উদ্ধারকাজের সক্ষমতা কতটা থাকবে। সেভাবে পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, বিনোদনকেন্দ্র, সিনেমা হল, শপিংমল, শিল্প কলকারখানা প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিটি হাউজিং স্টেটে বৃষ্টির পানি যেন সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকে সেজন্য জলাধার থাকতে হবে। নিজের নিরাপত্তার জন্যই এটা একান্তভাবে দরকার।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ, শিল্পকলকারখানা থেকে সবগুলো বিল্ডিংয়ে করণীয় কী হবে তা নিয়ে সবাইকে যেন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বক্স কালভার্ট বা জলাধার ভরাট করে ভবন নির্মাণ করা ঠিক না। 

ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, ওই এলাকা একসময় বিল এলাকা ছিল। যখন ওই বিল্ডিংয়ে আগুন লাগল পানি পাওয়া যায় নাই। হোটেল সোনারগাঁয়ের সুইমিং পুল থেকে পানি আনতে হল। অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পানি পাওয়া যায় না। আগুন তো আর বসে থাকে না।আগুনের গতি তীব্র। আগুনের সাথে ফাইট করতে গেলে যে জিনিসগুলো দরকার সেগুলোই যদি পাওয়া না যায় তাহলে ফায়ার ফাইটাররা কাজ করবে কিভাবে? তাদেরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।

তিনি জানান, ফায়ার ফাইটারদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে সর্বমোট ৪৫৬টি ফায়ার স্টেশন চালু রয়েছে। নতুন ৪০টি ফায়ার স্টেশন যোগ হওয়া এই সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯৬টি। ইতোমধ্যে ৪০টি ফায়ার স্টেশনে জনবল নিয়োগ ও অগ্নি নির্বাপণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ প্রদান করা হয়েছে। ৪০টি ফায়ার স্টেশন চালুর মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর নতুন করে আরও সক্ষমতা অর্জন করলো। এতে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধ, জনজীবন ও জনগণের সম্পদ রক্ষা বহুলাংশে কমে আসবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

নবনির্মিত ৪০টি ফায়ার স্টেশন হলো- টাঙ্গাইলের ঘাটাইল ফায়ার স্টেশন, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, দৌলতপুর ও সাটুরিয়া ফায়ার স্টেশন, গাজীপুরের কাপাসিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর (পুনর্নির্মাণ) ও সিরাজদিখান, মাগুরা সদর (পুনর্নির্মাণ), কিশোরগঞ্জের নিকলী স্থল কাম-নদী, ঢাকার কল্যাণপুর, জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ী (পুনর্নির্মাণ), যশোর সদর ও ঝিকরগাছা (পুনর্নির্মাণ), যশোর সেনানিবাস, যশোরের চৌগাছা ও কেশবপুর, বাগেরহাটের মোল্লাহাট, ফরিদপুর সদর (পুনর্নির্মাণ), চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, হোসেনপুর, মিঠামইন ও পাকুন্দিয়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর, রাজবাড়ীর কালুখালী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, নোয়াখালীর কবিরহাট, বিবাড়ীয়ার বিজয়নগর, বান্দরবানের থানচি ও রামু, খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, নেত্রকোনার পূর্বধলা, ময়মনসিংহের গৌরীপুর এবং মাদারীপুরের কালকিনি ফায়ার স্টেশন।

Bootstrap Image Preview