রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলিতে কলেজছাত্রী সুমাইয়া আফরিন প্রীতি নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করবে না বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
প্রীতির বাবা জামান উদ্দিন শুক্রবার বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের হত্যার ঘটনায় মামলা করব না। আমরা কোনোদিন মামলায় জড়াই নাই। আমরা সাধারণ, নিরীহ মানুষ।’
নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জানিয়ে জামান উদ্দিন বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাই সাধারণ জীবনযাপন করি। বিচার চেয়েই বা কী হবে? বাংলাদেশে তো বিচার নাই। বিচার কার কাছে চাব, বলেন?’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সন্তানের কাছেই বাবার বিচার থাকে না। আর এ তো প্রশাসন। আমি নিরীহ মানুষ নিরীহভাবেই থাকতে চাই; ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আল্লাহ আছে একজন, তিনিই দেখবেন।’
এদিকে শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে প্রীতির বাল্যবন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আসেন মরদেহ দেখতে। প্রীতির মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
মর্গ থেকে ফেরার পথে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রীতির এক বান্ধবী ঢাকা পোস্ট কে বলেন, আমার বাসায় প্রীতিদের বাসায় পাশে রাজধানীর পশ্চিম শান্তিবাগে। আমরা একসঙ্গে এক কলেজে না পড়লেও সে ছোটবেলা থেকেই বান্ধবী।
তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে সে শাজাহানপুর এলাকায় আমাদের আরেক বান্ধবীর বাসায় যায়। সেখান থেকে রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাসার উদ্দেশে রওনা হয়। বাসায় ফেরার পথে গুলিতে আমার বান্ধবী নিহত হয়। আমরা যতটুকু জেনেছি, আরেক জনকে মারতে গিয়ে নাকি প্রীতিকে মেরে ফেলা হয়েছে।
এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ কেমন রাষ্ট্র, যেখানে একজন শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নেই? প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে ফেলল, এ কেমন রাষ্ট্র? কারো কোনোই মাথাব্যথা নেই। কেমন রাষ্ট্রে আমরা থাকি? আমার বান্ধবী অকালে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার কেন হলো?
শাহজাহানপুর থানার আমতলা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাজাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি নিহত হন।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ টিপুর গাড়িচালক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থল থেকে ১১টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট।
গুলিতে নিহত টিপু মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অপরজন ২৪ বছর বয়সী কলেজছাত্রী সুমাইয়া আফরিন প্রীতি রিকশায় করে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করেছে তার পরিবার।