Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফাঁসি থেকে খালাস চেয়ে হাইকের্টে আবেদন করেছে প্রদীপ-লিয়াকত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৪:০৮ PM
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৪:০৮ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে হাইকের্টে আপিল আবেদন করেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলী।

আপিল আবেদনের বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন প্রদীপের আইনজীবী রানা দাসগুপ্ত।

রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘সোমবার আপিলটি ফাইল করা হয়েছে। আবেদনে আমরা বলেছি, বিচারিক আদালত তার বিরুদ্ধে যে রায় ও আদেশ দিয়েছে তা সুষ্ঠু বিচার বিশ্লেষণ করে হয়নি। রায়টি তাড়াহুড়া করে দিয়েছে। আমাদের আপিলটি শুনানি করে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল ও রদ করার আর্জি জানিয়েছি।’

উচ্চ আদালতে রানা দাসগুপ্ত ছাড়াও প্রদীপের পক্ষে লড়বেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, ও ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ।

এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি লিয়াকত আলীর পক্ষেও আপিল করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রানা দাশগুপ্ত। তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আপিল আবেদনে শুনানি করবেন এসএম শাহাজাহান।

সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের ডেথ রেফারেন্স গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে এসে পৌঁছে।

গত ৩১ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল। রায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া সাতজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন টেকনাফ থানার এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, এএসআই সাগর দেব ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা, বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।

খালাস পাওয়া সাতজন হলেন টেকনাফ থানার কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এপিবিএনের সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সিনহা ‘লেটস গো’ নামের একটি ভ্রমণবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র বানানোর জন্য প্রায় এক মাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার একটি রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

কক্সবাজারের পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন। পরে পিস্তল বের করলে চেকপোস্টের পুলিশ তাকে গুলি করেন।

তবে পুলিশের এই দাবি নিয়ে শুরু থেকেই সংশয় ছিল। মামলার রায়ে বিচারক বলেছেন, এই হত্যা ছিল পরিকল্পিত।

বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘মেজর সিনহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন ওসি প্রদীপ। সিনহার হাতে পিস্তল আছে ভেবে গুলি করেন লিয়াকত। ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলে এসে সিনহার বুকের বাঁ পাশে লাথি মারেন। এতে মৃত্যু হয় সিনহার।’

ওই বছরের ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী, প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে এই হত্যায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়ে টেকনাফ থানায় করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

প্রায় সাড়ে চার মাস তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫-এর কক্সবাজারের তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ১৫ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

Bootstrap Image Preview