Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর পর ছয় নাম্বার রক্তিমও আইসিইউতে মৃত্যুপথযাত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০২:৪২ PM
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০২:৪২ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


সুরেশ চন্দ্রের মৃত্যুর ১০ দিন পর বেপরোয়া পিকআপচাপায় প্রাণ হারান তার পাঁচ সন্তান। আহত অপর সন্তান রক্তিমের জ্ঞান ফেরেনি ছয় দিনেও। গত রবিবার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের লাইফ সাপোর্ট   থেকে উন্নত ও সমন্বিত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে অবস্থা আগের মতোই স্থিতিশীল। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জ্ঞান ফেরেনি রক্তিমের। এ ছাড়া তার চিকিৎসার ব্যয় বহনে হিমশিম খাচ্ছে পরিবার।    

জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের হাসিনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুরেশ চন্দ্র মারা যান গত ৩০ জানুয়ারি। তার মৃত্যুর ১০ দিন পূর্ণ হওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সুরেশের ছেলেমেয়েরা বাড়িতে এসেছিলেন। ওই দিন বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় সুরেশ চন্দ্রের সন্তান অনুপম সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্মরণ সুশীল মারা যান। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই দিন চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অপর সন্তান রক্তিম সুশীলকে। ওই দিনই জরুরি ভিত্তিতে তার আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি না থাকায় পরদিন বেসরকারি এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক দিন রাখা হয়। কিন্তু আর্থিক অক্ষমতার কারণে পরে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেখানে দুই দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন রক্তিম। ]

গত রবিবার তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান সুরেশ চন্দ্র সুশীলের মেয়ে মুন্নী সুশীল। আহত হন আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে। নিহতদের বোন হীরা শীল মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা খাতুন পদ্ম বলেন, রক্তিমের অবস্থা এখনো আগের মতো স্থিতিশীল। একজন সাধারণ মানুষের জ্ঞানের মাত্রা থাকে ১৫, এখন উনার আছে মাত্র ৪। তাছাড়া তাকে বর্তমানে একটি মেশিনের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। কার্যত এ কারণেই তার প্রেসারসহ অন্য অর্গানগুলো কাজ করছে। তার সুস্থতার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যয় ও পাঁচ ভাইয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া- এসব কাজ শেষ করতে করতে আর্থিক কষ্টে পড়ে যায় পরিবারটি। প্রতিদিন তার চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে ১৫-১৭ হাজার টাকা। এই ব্যয় তারা আর বহন করতে পারছেন না। রক্তিম সুশীলের শ্যালক অনুপম শর্মা বলেন, তাদের বাবার মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে পাঁচ ভাইয়ের সব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হয়েছে। এখন রক্তিম সুশীলের চিকিৎসায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। পরিবারও এখন প্রায় নিঃস্ব। বর্তমানে চমেক হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে। আমার বোন, ভাগ্নেসহ পুরো পরিবার তার দিকে তাকিয়ে আছে।

Bootstrap Image Preview