Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঘুম পাড়িয়ে প্রেমিককে গলা কেটে হত্যা করলো মীম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১১:৫৪ PM
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১১:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


নরসিংদীর পলাশে গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় অচেতন করে মীর মাইনুল হক (২৫) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করেছে তার প্রেমিকা। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এমন তথ্য জানিয়েছে ঘাতক প্রেমিকা ইসরাত জাহান মীম । রবিবার সন্ধ্যায় এই তথ্য জানিয়েছে পলাশ থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত ইসরাত জাহান মীম উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের ইমরান হোসেনের মেয়ে। শনিবার রাতে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে শনিবার বিকেলে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ঘোড়াশাল বাজারে টুথ ডেন্টাল নামে একটি চেম্বার থেকে মাইনুলের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মীর মাইনুল হক ঘোড়াশাল দক্ষিণ চরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ফেলু মীরের ছেলে। তিনি ঘোড়াশাল মুসাবিন হাকিম ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পাশাপাশি ঘোড়াশালে টুথ ডেন্টালে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃত মীমের তথ্যের বর্ণনা দিয়ে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, মীম ও মাইনুল স্কুল জীবন থেকেই একে অপরের পরিচিত। দু'জন স্থানীয় মুসা বিন হাকিম কলেজে একসঙ্গে পড়তেন। একসময় দু'জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের মাঝামাঝিতে মীম আরেক ছেলেকে বিয়ে করে করলেও সংসার টেকেনি। ফলে পুরনো প্রেমিক মাইনুলের সঙ্গে ফের সম্পর্কে জড়ায়। কিন্তু এরই মাঝে শ্রাবন্তীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন মাইনুল। গোপনে একই সঙ্গে দু'জনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালাতে থাকেন মাইনুল। এরই মধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রাবন্তীকে বিয়ে করেন পেশায় দাঁতের চিকিৎসকের সহকারী মাইনুল। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বাসায় বসবাস করতে থাকেন। 

বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় মাইনুল। শনিবার বিকেলে ডেন্টাল চিকিৎসক শিহাবুল হক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তালা খোলার পর অভ্যর্থনা কক্ষে মাইনুলের গলা কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এরপরই রাতে সন্দেহভাজন মীমকে বাসা থেকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে মীম সব স্বীকার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মীম পুলিশকে জানায়, মাইনুলের বিয়ে করার কথা জানতে পেরেই চেতনানাশক ইনজেকশন কেনেন মীম। কৌশলে মাইনুলকে তার কর্মস্থলে ডেকে নেন। এক পর্যায়ে ঘাড়ে ইনজেকশন পুশ করেন মাইনুলকে ঘুম পাড়িয়ে দেয় মীম। এরপর ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে মাইনুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায় মীম।

মীমের বর্ণনা অনুযায়ী, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করায় চেতনানাশক ইনজেকশন ও তা দ্রুত পুশ করার ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা ছিল। ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে হত্যা মিশন শেষ করেন। এরপর ছুরি, মোবাইল ও সিরিঞ্জ ঘোড়াশাল এলাকার নিকটবর্তী শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইদুর মীর বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ইসরাত জাহান মীমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Bootstrap Image Preview