Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু’ বলল জাতিসংঘ, কড়া জবাব দিলো ঢাকা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০১:৩৪ PM
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০১:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত নাগরিক বা রাখাইনের মুসলিম ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায় বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। এতে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর এ বিষয়ে জানতে ঢাকায় পাঠানো চিঠিতে রোহিঙ্গাদের এভাবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চিঠির উত্তর দিয়েছে বাংলাদেশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টিতে উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছিল ইউএনএইচসিআর। সেখানে রোহিঙ্গা নিরাপত্তায় বাংলাদেশের পদক্ষেপ সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে রোহিঙ্গা নেতার হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে বাংলাদেশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে এবং কী ধরনের নিরাপত্তা দিয়েছে তা জানানো হয়েছে।

‘২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর জাতিসংঘ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দূতকে বাংলাদেশ পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। আর সাময়িকভাবে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয়।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শুধু তা-ই নয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দূতকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে সঠিকভাবে উল্লেখ করতে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।’

মুহিবুল্লাহর ওপর কোন ধরনের হুমকি ছিল, সে বিষয়ে ধারণা ছিল না বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের। তবে ঘটনার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ অপরাধীদের গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

চিঠিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে ১ হাজার ৬১৬ জন পুলিশ সদস্য এবং ৪২৭ জন আনসার সদস্যকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক অনিচ্ছা ও প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

এতে ক্যাম্প এলাকা ঘিরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে বলেও চিঠিতে জানায় ঢাকা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আরআরআরসি) সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৯ আগস্ট শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে লিখিতভাবে হত্যার হুমকির কথা জানিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ। সেই সঙ্গে নিজ নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আবেদনও করেছিলেন তিনি।

আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে আসছেন ইউএনএইচসিআরের ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি ক্লেমেন্স। ১৩ ফেব্রুয়ারি তার ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে।

এরপরই তিনি কক্সবাজার যাবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে। সেখানে থাকবেন ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভাসানচরেও যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি। ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়ার কথা তার।

কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এশার নামাজ শেষে রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা জানান, লম্বাশিয়া ক্যাম্প ওয়ান ওয়েস্টে তার বাসার সামনে প্রতিদিনের অফিস করছিলেন। ওই সময় হঠাৎ একদল লোক এসে তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়।

পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পাঁচজন ও উখিয়া থানা পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

সূত্রঃ নিউজবাংলা 

Bootstrap Image Preview