Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বুধবার, মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে পাঁচ মাসে ৫ ভূকম্পন: চট্টগ্রামে বড় বিপদের বার্তা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী ২০২২, ১২:২৭ PM
আপডেট: ২৫ জানুয়ারী ২০২২, ১২:২৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


চট্টগ্রামে গত ৫ মাসে ৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। রিখটার স্কেলে ৫ মাত্রার ওপরে ছিল এসব ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থলও ছিল ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত বার্মিজ ফল্ট লাইনে। এসব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, ভূমিকম্পের এই উৎপত্তিস্থলে চরম অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে; যা আগামীতে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের বার্তা দিচ্ছে। আর তেমন হলে চট্টগ্রামে জানমালের চরম ক্ষয়ক্ষতিসহ বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

চুয়েটের আর্থকোয়েক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. আবদুর রহমান ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, সাধারণত বড় আর্থকোয়েকের আগে ছোট ছোট আর্থকোয়েক হয়ে থাকে। এ ঘটনাগুলোকে ওয়ার্নিং হিসেবে নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত থাকতে হবে। 

তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশ ভূমিকম্পের তিনটা প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান করছে। এর মধ্যে ইউরেশীয় প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেট যেটাকে আমরা সাবস্ট্রাকশন জোন বলি, এটা একটু বিপজ্জনক। যে কারণে অল্প মুভমেন্টে দেখা যায় বড় ধরনের আর্থকোয়েক হতে পারে। যেটা ২৬ নভেম্বর ভোরে হলো। ৬ দশমিক ১ মাত্রা যা মোটেও কম নয়। 

এ ছাড়া চিটাগং জোন এ প্লেটের ফোকাল পয়েন্ট থেকে ১৮০-১৮৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। যার কারণে সেবার তেমন একটা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কেবল দুয়েকটা ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়েছিলাম। তবে এটা একটা ওয়ার্নিং। ভবিষ্যতে এ প্লেটের সংযোগস্থলে আরও বড় ধরনের আর্থকোয়েক হতে পারে। ন্যাচার আমাদের সেই বার্তাই জানাচ্ছে।

সূত্র মতে, গত ২১ জানুয়ারি ৪টা ১২ মিনিটে চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় সর্বশেষ মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের ফালাম শহরে ও রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৫৬ কিলোমিটার গভীরে ছিল এটির অবস্থান। ২৭ নভেম্বর বিকালে হওয়া ভূমিকম্পটিও রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থলও ছিল বার্মিজ ফল্টে। এর এক দিন আগে ২৬ নভেম্বর ভোরে অনুভূত হয় মাঝারি আকারের ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১; যা মাটির ৩২ কিলোমিটার গভীরে অবস্থান করছিল। এই ৩টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে। 

এর আগে ভূমিকম্প হয় ৮ অক্টোবর। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। এটি ১১০ কিলোমিটার গভীরে অবস্থান করছিল। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ৩২ মিনিটে বুকে কাঁপন ধরানো ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পটিও ছিল ৫ দশমিক ৬ মাত্রার। 

আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, গত ৫ মাসে যে ৫টি ভূমিকম্প হয়েছে বার্মিজ ফল্টে সেগুলো চট্টগ্রাম শহর থেকে গড়ে ২৫০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে অবস্থিত। ফলে আগামীতে একই স্থানে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার মতো পর্যাপ্ত শক্তি জমা রয়েছে। যদি তেমনটা হয় তা হলে চট্টগ্রাম শহরে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

Bootstrap Image Preview