Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধর্ষণের আগে অতিরিক্ত মদপান করানো হয় ইউল্যাবের সেই শিক্ষার্থীকে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী ২০২২, ০৮:৪৯ PM
আপডেট: ১২ জানুয়ারী ২০২২, ০৮:৪৯ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও আসামি মর্তুজা পূর্বপরিচিত ছিলেন। সেই সুবাদে তারা প্রায়ই একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। এ ধারাবাহিকতায় উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানে হালকা নাস্তার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত মদপান করানো হয়। এরপর মর্তুজার অন্য বান্ধবীর বাসায় নিয়ে ভুক্তভোগীকে দুই রাত ধরে ধর্ষণ করা হয়। অতিরিক্ত মদপান ও ধর্ষণের কারণে মারা যায় ওই শিক্ষার্থী।

ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করে দেওয়া চার্জশিটে একথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. সাজেদুল হক আসামিদের বিরুদ্ধে এই চার্জশিট দাখিল করেন। ডিএমপির অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।  চার্জশিটভুক্ত ছয় আসামি হলেন মর্তুজা রায়হান চৌধুরী, মোসা. নুহাত আলম তাফসীর, ফারজানা জামান ওরফে নেহা, শাফায়েত জামিল, রিয়াজ উদ্দিন ও নুরুল আমিন। রিয়াজ ও নুরুল আমিনের বর্তমানে কারাগারে এবং বাকিরা জামিনে আছেন। আরাফাত অতিরিক্ত মদ্যপানে মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।  

আসামি মর্তুজা রায়হানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ও দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় ধর্ষণ ও অতিরিক্ত মদ্যপান করানোর মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। আসামি নুহাত আলম তাফসীরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতা এবং ফারজানা জামান নেহা ও শাফায়েত জামিলের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অতিরিক্ত মদ পান করানোর মাধ্যমে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়। আর ক্ষতিকর মদ সরবরাহের জন্য দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয় আসামি রিয়াজ উদ্দিন ও নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।

চার্জশিটে বলা হয়, নিহত ছাত্রী ও আসামিরা পরস্পর পরিচিত ছিলেন এবং একইসঙ্গে চলাফেরা করতেন। শিক্ষার্থী, প্রধান আসামি মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসীর সহপাঠী ছিলেন। এছাড়া ক্ষতিকর মদ্যপানে মৃত আরাফাত ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইংলিশ মিডিয়ামে এক সময় সহপাঠী ছিলেন।  

গত বছর ৩১ জানুয়ারি চারজনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বাবা। আসামিদের মধ্যে মর্তুজা রায়হান চৌধুরী আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত বছর ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। সেখানে স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও মর্তুজা রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং শাফায়াত জামিল উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ওই তরুণীসহ আসামিরা মদপান করান।

এজহারে আরো বলা হয়, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে মর্তুজা রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বান্ধবী নুহাত আলম তাফসীরের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে মর্তুজা ও তরুণীকে একটি রুমে থাকার সুযোগ করে দেন নুহাত। রাতে ওই রুমে মর্তুজা তরুণীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।  

ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে মর্তুজা রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুইদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ওই তরুণী মারা যান।

Bootstrap Image Preview