চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন গোয়েন্দারা। গত মঙ্গলবার র্যাব সদর দপ্তরে প্রায় ৫ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইমনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে তাকে আবার ডাকা হতে পারে। এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও তাকে জেরা করেছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত দু'জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডা. মো. মুরাদ হাসান কবে তাকে ফোন করেছিলেন তার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চাওয়া হয়। এর উত্তরে ইমন জানিয়েছেন, যে কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে ওই কলটি মুরাদ করেছিলেন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কল রেকর্ড কীভাবে ভাইরাল হলো- এর উত্তরে ইমনের ভাষ্য, কীভাবে এই রেকর্ড ভাইরাল হলো- এটা তার জানা নেই। জ্ঞাতসরে কাউকে এই রেকর্ড তিনি দেননি। তার মোবাইলে রেকডিং অপশন ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি। আর সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী যে মোবাইল সেটে তাকে কল করেছিলেন সেটি এক বছর আগে বদলান তিনি। ওই মোবাইল সেটটি কোথায় আছে এটা তিনি মনে করতে পারছেন না বলে জানান। ওই মোবাইল সেট খুঁজে বের করে ফের গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয় ইমনকে।
একজন কর্মকর্তা বলছেন, ইমন যেসব তথ্য দিয়েছেন তা যাচাই-বাছাই চলছে। প্রয়োজনে এই ঘটনায় আরও কয়েকজনকে ডাকা হতে পারে। ইমনের ব্যাপারে আরও বিশদ খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তার যোগাযোগের সূত্রগুলো খতিয়ে দেখছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ইমন দাবি করেন, কাজের সূত্র ধরেই মুরাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার। মাঝে মাঝে তার সঙ্গে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর কথা হতো।
এদিকে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা মামলার করার মতো অপরাধ কি-না এমন মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। শাহবাগ থানা থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি বুধবার ডিএমপি কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে বক্তব্য দেন মুরাদ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার গত মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার সমকালকে বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা মামলাযোগ্য কি-না এ ব্যাপারে মতামত চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সাইবার অপরাধ বা সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগ থেকে হয়তো মতামত আসবে।
সম্প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন ডা. মো. মুরাদ হাসান। সর্বশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সঙ্গে চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ফোনালাপ ফাঁস হয়। সেখানে তিনি মাহিকে উদ্দেশ করে হুমকি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে আসার ধমকি দেন। চিত্রনায়ক ইমন তার ফোন থেকে মাহিকে সদ্য সাবেক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এটা স্বীকারও করেন।