Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পূর্বাচলে খাবার হোটেলে নারীদের নিয়ে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর ভয়ংকর ফাঁদ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:৩৫ AM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:৩৫ AM

bdmorning Image Preview


রাজউকের নির্মাণাধীন রূপগঞ্জের পূর্বাচল নতুন শহর দেখতে আসা দর্শনার্থীরা অজান্তেই পা দিচ্ছেন ভয়ংকর ফাঁদে। আর এ ফাঁদ হচ্ছে খাবার হোটেলের খুপরি ঘর। একটু নিরাপত্তা ও নিরিবিলির কথা ভেবে এসব খুপরি ঘরে বসে খেতে গিয়ে কিংবা লেকপাড়ে রাখা চেয়ারে আরাম করার খেসারত গুনছেন অতি মূল্য পরিশোধ করে।

এছাড়া ঘুরতে আসা প্রেমিক-প্রেমিকাদের একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ দিয়ে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণের পর করা হয় ব্ল্যাকমেইল। দাবি পূরণ না করলে লোক ডেকে বা পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সম্মানহানির ভয়ে হয়রানির শিকার লোকজন মুখ বন্ধ রাখছেন। তবে হোটেলে নিয়োজিত কর্মচারীরা এমন অপকর্মে সরাসরি জড়িত থাকে বলে দাবি করেন মালিকপক্ষ।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, এ প্রকল্পে ইতোমধ্যে প্লটের অবস্থান নির্ণয়, রাস্তাঘাট নির্মাণ, নয়নাভিরাম লেক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ৬ হাজার ১৫০ একর জমির এ প্রকল্প এলাকা অনেকটা নির্জন ও খোলামেলা। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী বেড়াতে আসেন। তাদের ভোজন চাহিদা মেটাতে অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন সেক্টর ও ৩শ ফুট সড়কের আশপাশে গড়ে উঠেছে হাজারের বেশি খাবার হোটেল। এসব হোটেলের বেশিরভাগ ছন, বাঁশ ও টিন দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। সাধারণ খাবার বিক্রি করা হলেও প্রায় অর্ধশতাধিক খাবার হোটেল ভিন্ন কৌশলে পেতেছে ভয়ংকর ফাঁদ।

অনেকেই খদ্দেরদের কৌশলে সংগ্রহ করা মোবাইল ফোনের ইমু আইডিতে বিশেষ সুযোগের অফার পাঠান। এভাবে নারীদেহ ও মাদক বাণিজ্যে চালায় তারা। অভিযোগ রয়েছে, পূর্বাচল নতুন শহর দিয়ে যাওয়া এশিয়ান বাইপাস সড়কের পাশের খাবার হোটেল ঘিরে সক্রিয় আছে বড় ধরনের মাদক চোরাচালান চক্র। আগে পূর্বাচলের গোবিন্দ্রপুর, বড়কাউ, পারাবর্তা, হারারবাড়ি, পর্শ্বি এলাকায় ছিল বিশাল গজারি বন। সেসব বনে চলত চোলাই মদের ব্যবসা। সেই ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখন খাবার হোটেলের আড়ালে পুরোনো ব্যবসা চালাচ্ছেন।

দেখা গেছে, ময়েজদ্দিন চত্বর এলাকায় পাগলা বাবুর্চি নামে একটি খাবার হোটেলে রয়েছে ৯টি খুপরি ঘর। তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ রাখা হয়েছে হোটেলটিতে। আবার সাধারণ দর্শনার্থীদের কাছে খাবারের বিলে আদায় করা হচ্ছে মনগড়া দাম। এসব বিষয়ে হোটেলের মালিক সেলিম মিয়া বলেন, দূর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ আনতে হয়। প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যায়। তাছাড়া কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আছে। তাই দাম একটু বেশিই রাখতে হয়। এটা শুধু আমার হোটেলেই নয়। পূর্বাচলের প্রায় সব হোটেলে একই রকম। তবে অন্য খাবার হোটেলে পর্দা টাঙিয়ে গোপন কক্ষ তৈরি করে দিলেও আমার খুপরি ঘরে দরজা রাখিনি। যাতে কেউ অসামাজিক কাজ না করতে পারে।

পূর্বাচলের বাসিন্দা ও ঠিকাদার আবুল ফজল রাজু বলেন, এখানে ঘুরতে আসা লোকজনই নন, এখানকার ঠিকাদার, প্লট মালিক, ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকার ঘোষিত থানা বাস্তবায়ন জরুরি।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, এখানে পুলিশ সদস্য পর্যাপ্ত না হলেও তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে পূর্বাচলের হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে মাদকসেবন ও অসামাজিক কাজে যুক্ত ২৪ নারী ও পুরুষকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পূর্বাচলের জন্য আলাদা টহল দল আছে। কেউ এ অঞ্চলে এসে হয়রানির শিকার হলে আমাদের জানালে অবশ্যই আইনি সহায়তা দেব। খাবার হোটেলগুলো নজরদারির আওতায় আনা হবে।

Bootstrap Image Preview