চলছে দুই সপ্তাহের কঠোর শাটডাউন। ঈদের ছুটি শেষে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার থেকেই দেশজুড়ে ফের ১৪ দিনের শাটডাউন শুরু, শেষ হবে ৫ আগস্ট ভোরে। এ সময় কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে মানুষের অবাধ চলাফেরা।
তবে বরাবরের মতো জরুরি সেবাকে বিধিনিষেধের বাইরে রাখা হয়েছে। জরুরি সেবার মধ্যে যারা আছেন, তাদেরও চিহ্নিত করেছে সরকার। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা, চিকিৎসেবা, মরদেহ দাফন বা সৎকারের মতো বিষয়গুলো রাখা হয়েছে অতি জরুরি খাতে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ঈদের আগেই প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছিল, ঈদের তৃতীয় দিন ভোর থেকেই ফের দেয়া হবে দুই সপ্তাহের কঠোর শাটডাউন, যা শেষ হবে ৫ আগস্ট ভোরে। ওই সময় বিধিনিষেধের বিষয়গুলোও উল্লেখ করে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে উল্লেখ করে দেয়া হয় শাটডাউনমুক্ত জরুরি পরিষেবাগুলোও।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে বাড়ির বাইরে আসা যাবে। তবে সঙ্গে রাখতে হবে টিকা কার্ড। আর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের ভ্রমণের টিকিট দেখানোর শর্তে গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের সুযোগ দেয়া হবে।
জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িতদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাড়ির বাইরে আসার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কারা এসব পরিষেবা সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই তালিকায় রয়েছে কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যশস্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনাভাইরাসের টিকাদান, রাজস্ব আদায়-সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালস।
এসব জরুরি অত্যাবশকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোর কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
মানুষের নিত্যপ্রয়োজনী সামগ্রীর চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছে সরকার। এ বাজারগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন, বাজার কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসনকে।
খাবারের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে। কিন্তু কোনো ক্রেতাকে বসিয়ে খাওয়ানো যাবে না।
এ ছাড়া জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, নৌযান, পণ্যবাহী রেল, ফেরিকেও নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রেখেছে সরকার। সচল থাকবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো।
সরকার থেকে বলা হয়েছে, শাটডাউনের সময় অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ আসতে পারবে না বাড়ির বাইরে। নির্দেশনা না মানলে নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।
নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠপর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া মাঠে থাকবে বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার। মোড়ে মোড়ে বসানো হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর আওতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনি ক্ষমতা দেবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।