টিটকারি করায় প্রেমিকাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে নাজিম

বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামে বসতঘরের ভেতরে স্কুলছাত্রী নাজনিন আক্তারকে (১৮) জবাই ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত একমাত্র অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন (২১) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার সকালে নাজিম উদ্দিন সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক লায়লা মেহের বানুর কাছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। জবানবন্দিতে নাজিম খুনের কথা স্বীকার করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাজনিন আক্তারের সাথে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বখাটে নাজিম উদ্দিন। তবে মাস তিনেক পূর্বে তাদের সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। অন্যদিকে, বেশ কিছুদিন ধরে নাজনিনের পরিবারে তার বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা চলছিল। এ নিয়ে নাজনিন আক্তার ও নাজিম উদ্দিন মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। পরে পারবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলে নাজনিন উত্তেজিত হয়ে সকলের সামনেই নাজিম উদ্দিনকে বর্ণবাদ নিয়ে অপবাদ দেইয় ও কটাক্ষ করে এবং এতে অপমানিত বোধ করে নাজিম উদ্দিন। তাছাড়া সম্প্রতি নাজিম উদ্দিনকে দেখে প্রায়ই ব্যাঙ্গ করে কথাবার্তা বলতো ও টিটকারি করতেন নাজনিন। এ নিয়েই মূলত নাজিম উদ্দিন মধ্যে ক্ষোভ জমে এবং সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে বাড়ির বাসিন্দাদের অগোচরে নাজনিনকে একা পেয়ে জবাই ও কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি।

পুলিশ ও নাজনিনের পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নিজের বসতঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিলো তরুণী নাজনিন আক্তার। বাড়ির সকলের অগোচরে সেই ঘরে ঢুকে পিছন থেকে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে দা দিয়ে গলায় কোপ দিয়ে তরুণীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে নাজিম উদ্দিন। খুন করার পর থেকেই পালিয়ে যায় সে। টানা ৯ ঘণ্টাব্যাপী বিরামহীন অভিযান চালানোর পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওইদিন সন্ধায় সাড়ে ৭টার দিকে কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গারজুর এলাকা থেকে নাজিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত তরুণী নাজনিন আক্তার বিয়ানীবাজারের শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামের সামসুল হক চৌধুরী পালিত কন্যা। অন্যদিকে ঘাতক নাজিম উদ্দিনের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর এলাকায় হলেও সে পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বালিঙ্গায় তার নানা বাড়িতে বসবাস করছিল। তার পিতার মৃত আব্দুল খালিক।