বিডিমর্নিং ডেস্কঃ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে আজ (১৩ ডিসেম্বর) আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের চার মাস পর আদালতে এ মামলার চার্জশিট জমা দেন র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ পত্রের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় সব মিলিয়ে মোটি ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের নির্দেশনায় সব গুলো মামলার তদন্ত করে র্যাব। এর মধ্যে একটি মামলা টেকনাফ থানায় মাদক সংক্রান্ত যা শহীদুল ইসলাম সিফাতকে আসামী করা হয়, পুলিশ ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মেজর সিনহা এবং সিফাতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। আরেকটি মামলা রামু থানায় শিপ্রা দেবনাথকে আসামী করে দায়ের করা হয়।
এই মামলা তিনটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দেয়া হয়েছে। সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় এবং মামলার স্বপক্ষে কোন সাক্ষী প্রমাণ না থাকায় তাদের দায়মুক্তি দেয়ার জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। চার নম্বর মামলাটি সিনহা মো. রাশেদ খানের বড় বোন টেকনাফ আদালতে দায়ের করেন যা র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এই হত্যাকাণ্ডের মামলা র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম তদন্ত করেন। চার মাস ১০ দিন সময় নিয়ে এই মামলার তদন্ত করে এরইমধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এতে সর্বমোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জন টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্য, ০৩ জন এপিবি এর সদস্য এবং ০৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি। কনস্টেবল সাগর দেব নামে একজন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া দুজনকে নাম-ঠিকানা সঠিক না থাকার কারণে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১২ জন নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে। ওসি প্রদীপ এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে জবানবন্দি দেননি। তদন্তকারী কর্মকর্তা ৮৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন। বিভিন্ন ধরণের আলামত ও ডিজিটাল কন্টেন্ট আমলে এনে হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযোগপত্র প্রদান করেছে।
কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন., বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সাক্ষী, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষী, আলামত, জবানবন্দি নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।এর মূল পরিকল্পনাকারী টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাস। তিনি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বিষয়গুলোকে ধামাচাপা ও ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেছেন।