হেফাজতের ২০১৩ সালের তাণ্ডবের তদন্ত শুরু

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ইসলামপন্থী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কয়েক হাজার সদস্য ২০১৩ সালে ৫ মে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালায়। এ ঘটনায় দায়ের করা ৬২টি মামলার তদন্ত পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন ছিল। মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে হবে এবং এর জন্য চার্জশিট বা অভিযোগপত্র সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দিতে হবে।’

তিনি আরও জানান, ‘এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া এবং এর জন্য বিশেষ কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’

রাজধানীর ধোলাইখালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর পরেই হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী সম্প্রতি বলেছেন, স্থাপন করা হলে ভাস্কর্যটি টেনে নামানো হবে।

গত বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ হেফাজত নেতাদের নিয়ে গঠিত ইসলামী আলেমদের একটি অংশ ‘ফতোয়া’ দেন যে কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য ইসলামে নিষিদ্ধ।

২০১৩ সালের ৫ মে তারা কয়েকশ দোকান, গাড়ি ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন বইয়ের দোকানে লুটপাট করে। পরের কয়েকদিন বিভিন্ন জেলাতেও এই সংঘর্ষ হয়।

এসব ঘটনায় ঢাকাসহ সাত জেলায় মোট ৮৩টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে তিন হাজার ৪১৬ জনের নামে এবং ৮৪ হাজার ৭৯৬ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এসব মামলার মধ্যে শুধুমাত্র বাগেরহাটে দায়ের হওয়া মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকী মামলার মধ্যে ১৮টির তদন্ত চলছে এবং দুটির অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও স্থবির অবস্থায় রয়েছে ৬২টি মামলা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘পুলিশের হাতে অনেক বিচারাধীন মামলা ছিল যেগুলোকে শেষ করতে অগ্রাধিকার দিতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোট ৮৩টি মামলার মধ্যে সাতটি হত্যা মামলাসহ ৫৩টি মামলা হয়েছে রাজধানীতে। এতে আসামি করা হয়েছে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে।’

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘যে কোনো মামলার তদন্তের গতি যেকোনো সময় বাড়তে পারে। ‘আমরা তদন্ত করছি। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছুই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’

তিনি আরও জানান, ‘পুলিশের উপপরিদর্শক শাহজাহান হত্যা মামলার প্রধান আসামি হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীকে ২০১৩ সালের ৬ মে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি ২৯ মে জামিন পান। এরপর থেকে তিনি জামিনেই রয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ চলাকালে নিহত হন শাহজাহান।