Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিশ্বনেতাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৩৭ PM
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৫৩ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: সংগৃহীত


করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় যথাসময়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য মানসম্মত ভ্যাকসিন ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি এটি স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং মহামারী পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩১তম বিশেষ অধিবেশনে প্রাক-রেকর্ডকৃত ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) বর্তমান চেয়ার আজারবাইজান এবং জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বৃস্পতিবার দু’দিনের এ অধিবেশন ডাকেন।

কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় তিনটি অগ্রাধিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হল: মানসম্পন্ন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সর্বজনীন ও ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত, এটি স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং মহামারী-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আর্থিক সহায়তা প্রদান।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৩০ সালের উন্নয়ন এজেন্ডা সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের মৌলিক ভূমিকার স্বীকতি দেয়। একইভাবে যখন ভ্যাকসিন প্রাপ্তির কথা আসে, তখন কাউকে পেছনে রাখা সমীচীন হবে না। এটি মহামারী পরাস্ত করতে, জীবন বাঁচাতে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে আমাদের সহায়তা করবে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গোটা বিশ্বের জন্য একটি ‘বৈশ্বিক জনপণ্য’ বিবেচনা করতে হবে। ডব্লিবউএইচওর অ্যাক্ট এবং কোভ্যাক্স সুবিধার উদ্যোগ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর ট্রিপস চুক্তির আওতায় আইপি রাইটস ওয়েভার ব্যবহার করে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে এবং সুযোগ পেলে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোভিড-১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক সহায়তাসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। সরকারসমূহের পাশাপাশি জাতিসংঘ, আইএফআই, সুশীল সমাজকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় একে অপরের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘সারা বিশ্ব এখনও এই মারাত্মক ভাইরাস এবং এর প্রভাব মোকাবেলায় এক কঠিন সময় পার করছে। এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সর্বত্র নিয়ন্ত্রণে না আনলে কোভিড-১৯-কে কখনোই কোনো একটি স্থানে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। আসুন, আমরা একটি টেকসই বিশ্বের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা সম্পাদনে নতুনভাবে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করি, যেখানে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ভবিষ্যতের মহামারী মোকাবেলায় সমর্থ হবে।’

বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি লোক মারা গেছে এবং প্রতিদিন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ মহামারী অনেক মানুষকে দরিদ্র করে তুলেছে এবং আরও অনেকে ক্রমে দারিদ্র্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সব দেশে অপুষ্টি, বৈষম্য ও ক্রমবর্ধমান অসমতা চেপে বসছে এবং শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও পর্যটনে ধস নামায় মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ মহামারী আমাদের মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণের এবং তা আরও উন্নত করতে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে, কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি। অনেক দেশই দ্বিতীয় বা তৃতীয় ধাক্কার মুখোমুখি হচ্ছে।’

এ মহামারীর কারণে বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমাদের অর্থনীতি, আমাদের জীবন ও জীবিকা, আমাদের অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে ব্যাপক প্রভাবিত করেছে এবং আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়ন সাফল্যকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তবে আমরা শুরু থেকেই এবং কার্যকরভাবে হস্তক্ষেপ করেছি এবং আমাদের অর্থনীতি ও জনগণকে রক্ষায় সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যবসায়, কর্মসংস্থান ও উৎপাদনশীলতার ওপর প্রভাব হ্রাস করতে ১৪.১৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা আমাদের জিডিপির ৪.৩ শতাংশের সমান।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘মার্চ মাসের প্রথমদিকে ভাইরাস সনাক্তকরণের পর থেকে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি লোককে সহায়তা প্রদানে সামাজিক সুরক্ষাবেষ্টনীর আওতা সম্প্রসারণ করেছি। মহামারীর দ্বিতীয় ধকল সামাল দিতেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

Bootstrap Image Preview