মিয়ানমার সীমান্তে সে দেশের সেনাবাহিনীর সন্দেহজনক গতিবিধির কারণে ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পর উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের চিঠিও হস্তান্তর করা হয়।
মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে জানিয়েছি। এ ধরনের সন্দেহজনক আচরণ দুই দেশের কারও জন্য ভালো নয়।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে মাছ ধরার ট্রলারের ছদ্মবেশে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আন্তর্জাতিক সীমানায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাওয়ায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাখাইনের আরাকান আর্মির সঙ্গে যে সংঘাত চলমান, তার অংশ হিসাবে সৈন্যদের আসা-যাওয়া হতে পারে।
সেখানে এমন সন্দেহজনক গতিবিধি ঘটলে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ রয়েছে। তিন বছর আগে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে বাংলাদেশে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “রাখাইনে সংঘাত এলাকায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও রয়েছে। সে কারণে আমাদের জন্য তা বেশ উদ্বেগের। আবার যদি কোনো কারণে রোহিঙ্গা ঢল নামে আমাদের চাপের উপর চাপ বাড়বে।”
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
গত বছর দু’দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
রাখাইনে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ও রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।