মহামারি করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে সবাই। এই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মানুষ কত কিছুই না করছে। বিশেষজ্ঞরা দিচ্ছেন নানা পরামর্শ। করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ডা. এজাজুল হক এজাজ।
তিনি বললেন, করোনার উপসর্গ দিলে যেসব জায়গায় করোনাভাইরাসের পরীক্ষা হচ্ছে সেখানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা যদি উপসর্গ দেখে মনে করে পরীক্ষা করা দরকার তাহলে করবে। আর যত বেশি পরীক্ষা হবে তত বেশি মঙ্গল।
‘এখন তো পরীক্ষা করা সহজ হয়ে গেছে, জেলা পর্যায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাই কঠিন উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করাতে হবে।’
অভিনেতা এজাজ বলেন, আমাদের দেশের যা অবস্থা তাতে করে আমাদের সতর্ক না হয়ে উপায় নেই। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে কেন যে পারি না, আমরা নিজের চোখে বিপদ না দেখলে সতর্ক হতে চাই না। এখন দেশের যে অবস্থা এখন সতর্ক না হলে আমরা ভয়াবহ খারাপ অবস্থার দিকে যাবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা পালিয়ে বাঁচতে চাইছি। আমরা ইতালি, ফ্রান্স থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে বাঁচতে চাইছি, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা থেকে পালিয়ে গ্রামে গিয়ে বাঁচতে চাইছি।
‘এটা আসলে বাঁচা নয়, আপনি নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। একইসাথে আপনার আশেপাশের মানুষেরাও মৃত্যুর দিকে চলে আসছে আপনার কারণে। এটাকে বাঁচা বলে না, নিজেই নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। নিজের জায়গা থেকে বাঁচুন’, বলেন এই চিকিৎসক।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে অভিনয়ে আসেন এজাজুল ইসলাম। তারপর অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পেশায় চিকিৎসক হলেও অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন এজাজুল ইসলাম।
অভিনয়ের পাশাপাশি চিকিৎসক হিসাবেও তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। গরিবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
এভারগ্রিন বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক পেজে ডাক্তার এজাজের প্রশংসায় দেয়া একটি পোস্টের পর তাকে নিয়ে আলোচনায় মুখর হয়ে ওঠে ফেসবুক।
আব্দুল্লাহিল কাফী নামে এক ব্যক্তি ওই ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে এখনো ভালো এবং মানবিকতাসম্পন্ন ডাক্তার আছেন। তিনি হলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ডা. এজাজুজ ইসলাম। এই ধরনের ডাক্তারের কাছে গেলেই রোগ ৫০% ভালো হয়ে যায়। রেস্পেক্ট স্যার।’
তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে চিকিৎসক এজাজুল ইসলামের ফি এর বিষয়টি। পোস্টকৃত ছবিতে দেখা গেছে, চিকিৎসার জন্য ৩০০ টাকা নিয়ে থাকেন ডা. এজাজ। রোগী পুরনো হলে ফি ২০০ টাকা। আর গরীবদের বেলায় ফিসের বিষয়টি শিথিলযোগ্য।
ফেসবুকে আপলোডের পরপরই অনেকেই শেয়ার করেছেন এই পোস্টটি। অনেকেই তার প্রশংসায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
ফেসবুকে হঠাৎ ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ডা. এজাজ বলেন,‘রোগীরা ভালোবেসে এমন পোস্ট দিয়ে বসেন। গত রাতে টাঙ্গাইল থেকে আসা রোগী চেম্বারের ছবি তুলে নিয়ে গেছেন। তিনিই হয়ত এটা ফেসবুকে ছড়িয়েছেন।’
গাজীপুরে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন সন্ধ্যায় রোগী দেখেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘রোগীদের সুস্থ করে তুলতে সাধ্য মতো চেষ্টা করি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’