কোটার বাইরেও 'ভিআইপিদের' জন্য টিকিটের একটি বড় অংশ সার্ভার থেকে ব্লক করে রাখা হতো। ব্লক করা টিকিট বিক্রির জন্য কাউন্টারে আসত না। অনলাইনেও দেখাত না। এতে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পেতেন না। ব্লক করা টিকিটের একটি অংশ অবিক্রিত থেকে যেত। বড় অংশ চলে যেত কালোবাজারে। তা ঠেকাতে টিকিট ব্লক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রেলওয়ে।
রোববার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে রেলের টিকিট বিক্রির সার্ভারের দায়িত্ব থাকা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস) চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়া জাহান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রেলের টিকিট ব্লকিং বন্ধ রাখার জন্য সফটওয়্যার হালনাদাগ করতে হবে। কোটা ছাড়া অন্য কোনো টিকিট ব্লক করা যাবে না। কোটা থাকবে ২০১২ সালের পরিপত্র অনুযায়ী।
রেলের টিকিটে পাঁচ শতাংশ কোটা রয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। সব শ্রেণীর টিকিটে এ কোটা প্রযোজ্য। কিন্তু কর্মকর্তাদের জন্য উচ্চ শ্রেণীর অর্থাৎ, শীতাতপ কামরা ও কেবিনের আসন ব্লক করা হতো। রেলে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য কোটা রয়েছে। এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিরা চাহিদাপত্র দিয়ে প্রাধিকারের টিকিট পান। তাদের জন্য কোটা নেই।
রেল সচিব মোফাজ্জেল হোসেন জানিয়েছেন, নির্ধারিত কোটা ছাড়া আর কোনো টিকিট ব্লক করা হবে না। সব টিকিট কাউন্টারে ও অনলাইনে ছাড়া হবে বিক্রির জন্য।
যাত্রার ১০ দিন আগে আন্তঃনগর ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। রেল সূত্র জানিয়েছে, শুরু থেকেই এমপি, মন্ত্রী, রাজনৈতিক তদবিরে উচ্চ শ্রেণীর টিকিট ব্লক করা হতো। ফলে কাউন্টারে দেখানো হতো, কোনো আসন খালি নেই। যাত্রীরা এতে টিকিট বঞ্চিত হতেন।
সিএনএস নির্বাহী পরিচালক মেজর (অব.) জিয়াউল আহসান সমকালকে বলেছেন, রেল যেভাবে নির্দেশনা দেয় সেভাবেই টিকিট ছাড়া হয়। রেলওয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ব্লক করা যাবে না। সফটওয়্যার থেকে এখন ব্লক অপশন তুলে দেওয়া হবে।
সম্প্রতি দিনাজপুর স্টেশনে তদন্ত চালিয়ে টিকিট জালিয়াতি ধরা পরে। কাউন্টারে বিজ্ঞপ্তি ছিল, কোনো আসন খালি নেই। কিন্তু ৪ থেকে ৬ ডিসেম্বরের তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের এক হাজার ১০০ টিকিট অবিক্রিত থেকে যায়। এসব টিকিট ব্লক করা ছিল। এ ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ চারজনকে সাময়িক বরাখাস্ত করা হয়। এরপর ব্লক বন্ধে সক্রিয় হয় রেলওয়ে।