রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় গত ১৬ ডিসেম্বর ১০ বছর বয়সী পথশিশু সেলিমের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে(ওসি) মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামানের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেওয়া হয়। রিট আবেদনকারী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পথশিশু সেলিমের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট আবেদন করা হয়। আবেদনে সারাদেশে পথশিশুদের পুনর্বাসনে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আগুনে দগ্ধ সেলিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তার শরীরের ২৭ শতাংশ পুড়ে গেছে। সেলিম নিজের নাম ছাড়া অন্য পরিচয় বলতে পারেনি। বাবা-মার নাম বা বাড়ির ঠিকানা বলতে পারে না। সে কমলাপুর রেল স্টেশন এলাকায় থাকতো। শিশুটি জানায়, একজন রিকসা চালক ম্যাচের কাঠি দিয়ে তার আগে আগুন দিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, আগুনে পোড়া শিশুটিকে বিকেল সাড়ে ৪টার পর একজন লোক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঠিক কোথায়, কী কারণে, কে শিশুটির গায়ে আগুন ধরায়, সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।
তবে মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী আগুনে পোড়া শিশু সেলিমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। শিশুটি বলছে, অজ্ঞাত এক রিকশাওয়ালা তার গায়ে আগুন দিয়েছে। এর সত্যতা যাচাই করার জন্য কমলাপুর ও ফকিরাপুল এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ পেলে আসল ঘটনা জানা সম্ভব হবে।
পুলিশ কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানান, যে লোক শিশু সেলিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে তার খোঁজ মেলেনি। শিশুটি নিজের নাম ছাড়া তার মা-বাবা কিংবা তার বাড়ির কোনো ঠিকানা জানাতে পারেনি। তবে শিশুটি কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় থাকত। সে পথশিশু।
সারাদেশে পথশিশুদের পুনর্বাসনে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এবিষয়ে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে সমাজকল্যাণ এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।