ভারতের জাতীয় সংগীত জন গণ মন, জাতীয় ফল আম, জাতীয় পশু বাঘ, জাতীয় ফুল পদ্ম, জাতীয় পাখি ময়ুর, জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী। এসব কিছুই পড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে। শুধুই এসব নয়, ভারতের বিভিন্ন উৎসব, জাতীয় দিবস, বিভিন্ন প্রদেশের নাম ও রাজধানীর নাম, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের নাম শেখানো হচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের। এসবের পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় লেখা বইও পড়ানো হচ্ছে।
এসব পড়ানো হচ্ছে উত্তরায় অবস্থিত ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। এ কারণে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হর্ষ ওয়ালকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশি সংস্কৃতির চর্চা ও অশ্লীল পাঠ্যপুস্তক পড়ানোয় তাকে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে। দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা না করায় আদালত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে ডিপিএস-এসটিএস স্কুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ওমর সাদাত।
পরে অনিক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, “ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার জন্য হাইকোর্টের রায় রয়েছে। সেই রায় অমান্য করে উত্তরার ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা ও ভারতীয় বিভিন্ন দিবস, ব্যক্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। এছাড়া স্কুলটির অষ্টম শ্রেণিতে ‘The Perks of Being a Wallflower’ বইয়ে অপ্রকাশযোগ্য অশ্লীলতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর এসব বিষয়ে ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, শফিউল আযমসহ ১৫ জন অভিভাবকের পক্ষে স্কুলের অধ্যক্ষকে আদালত অবমাননার নোটিশ দিয়েছিলাম। সে নোটিশের জবাব না পেয়ে আদালত অবমাননার মামলা করি।”
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ মে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার ওপর জোর দিতে রায় দেন হাইকোর্ট। এছাড়াও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসসহ সব জাতীয় দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জাতীয় দিবসসমূহ যথাযথ মর্যাদায় পালনের পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী রবীন্দ্র-নজরুল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্বাধীনতায় আত্মদানকারীদের জীবনী নিয়ে অনুষ্ঠান করতেও রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।