Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কচুই একমাত্র নির্ভেজাল খাদ্য: রাষ্ট্রপতি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১২ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশে কচু ছাড়া বাকি সব খাবারেই ফরমালিন মেশানো। নির্ভেজাল খাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। খাদ্যে ভেজালের কারণে ক্যানসারসহ জটিল রোগ হচ্ছে। দেশের মানুষই দানব হয়ে যাচ্ছে।

আজ রবিবার বিকেলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পঞ্চম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আগে শুধু পকেট মারলেই গণপিটুনি দেওয়া হতো, এখন খাদ্যে ভেজালকারি মানুষকেও গণপিটুনি দিতে হবে। মানুষকে এ পথ থেকে ফেরাতে হবে। নইলে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাবো। ’

ক্ষোভ প্রকাশ করে আচার্য বলেন, ‘কচু ছাড়া সব কিছুতেই ফরমালিন। নির্ভেজাল খাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। খাদ্য ভেজালের কারণে ক্যান্সারসহ জটিল রোগ হচ্ছে। কিছু মানুষ দানব হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে মানুষকে ফেরাতে হবে।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ প্রকৌশলী সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। আপনারা জানেন, বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে দেশ যতবেশি উন্নত সে দেশ ততবেশি সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। আমাদের বিপুল মানবসম্পদ থাকা সত্ত্বেও কারিগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জিত না হওয়ায় আমরা আশানুরূপভাবে এগুতে পারিনি। বর্তমান সরকার কারিগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে।’

জাতীয় সংসদের সাবেক এ স্পিকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ যাবতকালের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উন্নয়ন বাজেট প্রদান ও গবেষণা বরাদ্দ প্রদান করা হচ্ছে। বিদ্যমান সুবিধাসমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণগত উচ্চশিক্ষা প্রদানে ব্রতী হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সার্টিফিকেট দেওয়া এবং শিক্ষার প্রসারই শেষ কথা নয়। আমাদের প্রয়োজন যুগোপগোগী শিক্ষা। বর্তমানে প্রতিনিয়তই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। কাজেই আমাদেরও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাস্তবভিত্তিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। গুণগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে লাবরেটরির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গবেষণা ও হাতে-কলমে শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এ জন্য গবেষণা ও ল্যাবরেটরি কর্মের ওপর অধিক মনোনিবেশ করা জরুরি।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে ন্যানো টেকনোলজি, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষা যাতে দেশের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের উন্নয়ন করার মধ্যেই উদ্ভাবনের সার্থকতা। তাই যুগোপযোগী ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সকলকে মনোনিবেশ করতে হবে। অন্যের অনুকরণ নয় বরং আমাদেরকে যাতে অন্যরা অনুকরণ করতে পারে সে লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা।’

রুয়েটে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াটেক অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, রুয়েট উপচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রুয়েটের পঞ্চম সমাবর্তনে মোট ২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে দুই হাজার ৫১৬ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং পিএইচডিসহ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছিলেন ৭০ জন।

সমাবর্তন আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারযোগে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

Bootstrap Image Preview