Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খালাস সংকটে পচে নষ্ট হচ্ছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৩৩ AM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৩৩ AM

bdmorning Image Preview


মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ খালাস সংকটে টেকনাফ স্থলবন্দরে পচে যাচ্ছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে এটি ব্যবসায়ীদের কৌশল। তবে, গত এক সপ্তাহে প্রায় তিন হাজার বস্তা পেঁয়াজ পচে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই অবস্থায় মিয়ানমার থেকে গত দুই দিন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. জালাল উদ্দিনসহ একটি প্রতিনিধিদল টেকনাফ স্থল বন্দর ঘুরে দেখেন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল হাসান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ স্থল বন্দরে পচে যাওয়া পেঁয়াজ খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে। সেখান থেকে শ্রমিকরা ভাল পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। নদীর তীরে রেখে দেওয়া হয়েছে পচে যাওয়া পেঁয়াজের সারি সারি বস্তা। এদিকে, গত দুই দিন আগে আমদানিকৃত পেঁয়াজ ভর্তি ৭টি ট্রলার বন্দরে খালাসের অপেক্ষা রয়েছে।

টেকনাফ শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা ৮ হাজার ৪৯৭ দশমিক ১১০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ খালাস করা হয়েছে। তবে গত দুই দিন ধরে মিয়ানমার থেকে কোনো পেঁয়াজের ট্রলার এ বন্দরে আসেনি। তবে এত বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এ সময় পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নুর আলম বলেন, 'একটি ট্রলারে তার কিছু পেঁয়াজ এসেছিল। খালাসে দেরি হওয়ায় পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দরের গাফলতিতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।'

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘খালাসে দেরির কারণে বেশ কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বন্দরে শ্রমিক সংকট ও নানা অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। তবে পেঁয়াজ আমদানি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হলে, পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের সম্ভাবনা রয়েছে।'

টেকনাফ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, 'গত এক সপ্তাহে খালাসে দেরি হওয়ায় আমদানিকৃত তিন হাজার পেঁয়াজের বস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বন্দরে জনবল ও অবকাঠামোর অভাবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসা কমে গেছে। তবে চার্জের কারণে রাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজের ট্রাকে ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। ব্যবসায়ীদের লোকসান কমাতে সরকারের কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার বন্দরে।'

টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবস্থাপক মো: জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে নিম্ন মানের পেঁয়াজ আমদানি করায়, সেগুলো পচে যাচ্ছে। সেখান থেকে পেঁয়াজের ট্রলার এখানে পৌঁছাতে ১০ দিন সময় লাগে। মূলত বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে, এসব বাহানা করছে ব্যবসায়ীরা। বন্দর কর্তৃপক্ষ সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন।

স্থল বন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন বলেন, গত দুই দিন ধরে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজের কোন ট্রলার আসেনি। চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৯৭ দশমিক ১১০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ খালাস করা হয়েছে। তবে দেশে পেঁয়াজের সংকট মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের আমদানি বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল হাসান বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু সমস্যা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজের ট্রলার দ্রুত খালাস করে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কেন পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Bootstrap Image Preview