মোটরসাইকেল চালিয়ে আসা ছিনতাইকারী রিকশা আরোহী নারীর ব্যাগ ধরে টান দিলে ওই নারী ও তার কোলে থাকা শিশু সন্তান রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুর ১টার সময় যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাশে মুজিব সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি যশোরে মোটরসাইকেল আরোহী যুবকদের হাতে ছিনতাইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। পুলিশ তাদের শনাক্তের চেষ্টা করছে বললেও এখন পর্যন্ত আটক হয়নি কেউ।
শুক্রবারের ঘটনায় আহতরা হচ্ছেন দিপালী বিশ্বাস ও তার ছেলে রিকো বিশ্বাস (৪)। দিপালী মাগুরার শালিখা উপজেলার আঠারোখাদা গ্রামের উত্তম বিশ্বাসের স্ত্রী।
আহত দিপালীর ভাই মিঠুন বিশ্বাস জানান, তিনি তার বোন দিপালী ও দুই ভাগনে রিকো ও আপনকে নিয়ে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে বাবার বাড়ি থেকে বোনের শ্বশুর বাড়ি মাগুরায় তাকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন।
শহরের চাঁচড়া মোড় থেকে তারা একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে উপশহরের বাস স্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। শহরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা দুই ছিনতাইকারী তার বোনের হাতের ব্যাগ ধরে টান দেয়।
এসময় তার বোন ও ছোট ভাগনে রিকো চলন্ত রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এসময় তাদের চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
মিঠুন বিশ্বাস বলেন, তার ভাগনের মাথায় আঘাত লেগেছে। তার বোন হাত ও পায়ের হাঁটুতে মারাত্মক জখম হয়েছেন।
আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কাজল মল্লিক জানান, আঘাত গুরুতর হলেও তারা শঙ্কামুক্ত।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোকলেছুজ্জামান। তিনি বলেন, ছিনতাইকারীদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে যশোর পৌরসভার সামনে মোটরসাইকেল আরোহী ছিনতাইকারীরা উষা আক্তার (২১) নামে আরও এক রিকশা আরোহী নারীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তিনিও রিকশা থেকে পড়ে আহত হন। উষা শহরের চাঁমড়া ডালমিল এলাকার টুকু রহমানের মেয়ে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উষা জানান, রাতে তিনি তার বড় বোনের বাড়ি শহরের মিশনপাড়ায় যাচ্ছিলেন। সঙ্গে বোন ও তার ছেলে ছিল। পৌরসভার সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক তার হাতে জড়ানো ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তিনি রিকশা থেকে নিচে পড়ে হাঁটুতে ও কোমরে আঘাত পান।
পৌরসভার নৈশ প্রহরীরা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এর আগে ৮ আগস্ট বিকেলে তালবাড়িয়ায় এনজিও কর্মী অনুপমা বিশ্বাসের টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনতাই হয়। তিনি এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণের টাকা সংগ্রহ করে ফিরছিলেন।
গত ১৯ আগস্ট রাতে শহরের ঈদগাহর সামনে সাহাবুদ্দিনের খান নাসিম নামে এক ব্যক্তির ব্যাগ মোটরসাইকেল আরোহী ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়। তিনি ঢাকা থেকে ফিরছিলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া গত ১৫ দিনে যশোর ঈদগাহ ময়দান লাগোয়া বাদশাহ ফয়সল স্কুলের পাশ থেকে দুপুরে এক নারীর ব্যাগ ও যশোর মুজিব সড়কের অনন্যা ঘোষ ডেইরির সামনে থেকে এক পথচারীর মোবাইল ফোন একইভাবে ছিনতাই হয়।
শহরে অব্যাহত ছিনতাইয়ের বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ছিনতাইকারীদের শনাক্তের চেষ্টা এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।