বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হত্যার পর আবরারের মোবাইল ও ল্যাপটপে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু না পাওয়ার পর তার কক্ষে মাদক রেখে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বুয়েট ছাত্রলীগের এসব নেতা-কর্মী।
তবে সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী বিষয়টি আবরারের কক্ষের অন্য সহপাঠীদের জানিয়ে দেয়। বিষয়টি জেনে ওই নেতাদের চাতুরি ঠেকাতে ১০১১ নম্বর কক্ষটির দরজা জানালা সব বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।
ওই কক্ষের পাশের একটি কক্ষের শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না কারার শর্তে গণমাধ্যমকে জানান, তারা (ছাত্রলীগ) চেয়েছিল ১০১১ কক্ষে মাদক রাখবে। আমরা পরে কক্ষটি পাহারা দেই। সবাই ঘুম থেকে ওঠার পর ছাত্রলীগ ধীরে ধীরে গা ঢাকা দেয়। তারপরও আবরারের কক্ষ আমরা পাহারা দেই।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের (পুলিশকে) খবর দিয়েও পরবর্তীতে তারা আর হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা বলছিল, ‘শিবির ধরা পড়েছে, তাকে নিয়ে যান।’ কিন্তু, থানা পুলিশ গেলে তাদের হলে ঢুকতে দেয়নি। তারা লাশ অনেকক্ষণ আটকে রেখেছিল। পরে শিক্ষকরা আসার পর আমরা লাশ ঢামেক হাসপাতালে পাঠাতে সক্ষম হই।
প্রসঙ্গত, ৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েক জনকে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় নিজ বাসার সামনে আবরারের তৃতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।