চাঁদের মাটিতে হয়তো স্বাভাবিক অবতরণ হয়নি, কিন্তু বিক্রম ‘অক্ষত’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান। কে শিবন চন্দ্রযান ২-এর ক্যামেরা দিয়ে তোলা বিক্রমের বিকিরণ চিত্রের বরাত দিয়ে গতকাল এমন দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘চাঁদের মাটিতে বিক্রম অখ-ই রয়েছে।’
তিনি জানান, এখনো অবতরকযানের সঙ্গে যোগাযোগ পুনর্স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। সে চেষ্টা ইসরোর সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা চালিয়ে যাচ্ছেন।
৭ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে চাঁদের মাটিতে নির্ধারিত পরিকল্পনামাফিক অবতরণ করছিল বিক্রম, যার বুকের ভেতর রয়েছে পরিভ্রমকযান প্রজ্ঞা। কিন্তু ঠিক চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে ২.১ কিলোমিটার ওপরে থাকার সময় বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরের দিন ইসরো জানায়, পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার ওপরে ঘুরতে থাকা মূল নভোযান বিকিরণ চিত্রের (থার্মাল ইমেজিং) মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে বিক্রমের অবস্থান শনাক্ত করেছে। আর গতকাল ড. শিবন বলেন, ‘পরিক্রমকযানে থাকা ক্যামেরায় তুলে পাঠানো ছবি থেকে বোঝা যাচ্ছে চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁয়ার আগে, বিক্রম দ্রুত অবতরণ করে। সেটি অক্ষত রয়েছে, ভেঙে টুকরো হয়ে যায়নি। এটি হেলে পড়ে রয়েছে।’
ইসরোর এক বিজ্ঞানী বলেছেন, বিক্রম যে আবার জীবন ফিরে পেয়ে আশার সঞ্চার করেছে, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তার কথায়, ‘তবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের মহাকাশযান খুঁজে পাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে বিক্রমের ক্ষেত্রে, এখানে এই ধরনের সুবিধা নেই। ইতোমধ্যেই সেটি চন্দ্রপৃষ্ঠে পড়ে রয়েছে এবং আমরা সেটাকে পরিবর্তন করতে পারছি না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যান্টেনা থাকা উচিত গ্রাউন্ড স্টেশন বা পরিক্রমকযানের দিকে। এ ধরনের অভিযান সত্যই খুব কঠিন।’
ইসরোর বিজ্ঞানীরা এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিক্রমের সঙ্গে আবার যোগাযোগ গড়ে তোলার সম্ভাবনা কমে আসছে। কিন্তু বিক্রম ও প্রজ্ঞার ১৫ দিনের যে আয়ু, সে সময় পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে চায় শিবনের দল। ইসরোপ্রধান বলেন, ‘বিক্রমের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করা যায় কিনা, আমরা তা সব রকমভাবে চেষ্টা করছি।’ বিক্রমের বিদ্যুৎ উৎপাদন কোনো বাধা নয়। কারণ ‘তার চারদিকে সৌরপাখা’ রয়েছে এবং ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাটারি’ও রয়েছে।