মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি আছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে চায়। এখন কোনও রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে না চাইলে তাকে জোর করে ফেরত পাঠানো উচিত।
প্রথমত রোহিঙ্গারা কোনও শরনার্থী নয়। বাংলাদেশ সরকার তাদের শরনার্থীর মর্যাদা দেয়নি। ফলে তাদের ক্ষেত্রে শরনার্থীরা যে ধরনের অধিকার ভোগ করে তেমন অধিকারের কোনও সুযোগ নেই। রোহিঙ্গারা বিপদে পড়েছিল। বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এখন তাদের ফিরে যেতে হবে। কেউ বিপদে পড়লে আপনি সাময়িকভাবে আপনার বাড়িতে আশ্রয় দিতে পারেন। তারপর তাকে চলে যেতে হয়। সে বলতে পারে না যে আমি আপনার বাড়ি ছেড়ে যাব না। এ কথা বললে আপনি নিশ্চয়ই তাকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেবেন। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারটাও একই ধরনের।
১৯৭৮ সালে এবং ১৯৯২ সালেও তারা বিপদে পড়ে বাংলাদেশে এসেছিল। মিয়ানমার তাদের ফেরত নিয়েছে। রোহিঙ্গারাও ফিরে গেছে। তখন কেউ বলেনি যে জোর করে ফেরত দেয়া যাবে না।
দুনিয়াতে অভিবাসী শরনার্থীদের খুব খারাপ সময় চলছে। আমেরিকা একটা লোককেও নিচ্ছে না। ট্রাম্প এখন বলছে, জন্মসূত্রে কেউ আমেরিকান হতে পারবে না। আদেশ দিয়ে তা বাতিল করে দেবে। অনেকে আমেরিকায় গিয়ে সন্তান প্রসব করে। ফলে সন্তান জন্মসূত্রে আমেরিকান হয়। পিতামাতাও আমেরিকার নাগরিকত্ব পায়। এখন এ আইন বাতিল করবেন ট্রাম্প। বিদেশী লোক আসে তাই ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপে কেবল অ্যাঞ্জেলা মার্কেল অভিবাসী নেবার পক্ষে থাকায় দেশের ভেতরে স্থানীয় ভোটে তার অবস্থা খারাপ।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে জোর করে পাঠানো যাবে না বলে কেউ কেউ বলেন। আমি মনে করি, রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় না যাইতে চাইলে জোর করে পাঠানো যাবে। অষ্ট্রেলিয়ার দিকে তাকান। তারা অভিবাসী কেউ অষ্ট্রেলিয়ায় চলে গেলে তাদের নির্জন দ্বীপ নাউরুতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কেউ আসলে মূল ভূখন্ডে কাউকে আশ্রয় দিচ্ছে না। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানো উচিত।
আমি জানি, পশ্চিমা দেশ, মানবাধিকার সংস্থা, এনজিও এ কাজের বিরোধিতা করবে। তাদের কথা শুনলে বাংলাদেশকে তারা একদিন অস্থির করবে। মিয়ানমারকে অস্থির করতে পারবে না। মিয়ানমারকে সবাই মিলে গত ৫০ বছরে অস্থির করতে পারেনি। যারা বাংলাদেশকে আশ্রয় দিতে বলে তারা নিজেদের দেশে একটা কাকপক্ষীকেও আশ্রয় দেয় না। তারা অন্যের কাধে বন্দুক রেখে শিকার করতে চায়।
আমি জানি, এদের সাথে সরকারের কোনও কোনও কর্মকর্তার লেনদেন আছে। তারাই এ মন্ত্র শিখিয়েছে যে, রোহিঙ্গাদের জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না। বাংলাদেশ নতজানু না। নিজের সিদ্ধান্ত ভাল মন্দ বিচার করে নিজেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাইরের কারও কথায় সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত না। আমরা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষদের আশ্রয় দিতে থাকলে আসামসহ অনেক দেশ থেকে মানুষ এদেশে আসবে। গিজগিজ করবে। তাদের না বলতে পারবেন না। মনে রাখা দরকার, রোহিঙ্গা নয়, মিয়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতা করা বাংলাদেশের জন্য জরুরি।
চীন ও ভারত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয় নির্মাণ করেছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নাগরিকত্ব দেয়াসহ কফি আনান কমিশনের সব দাবি যৌক্তিক। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে সেদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুক। তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করার জন্য বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করতে দেয়া উচিত না।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)