Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টঙ্গীতে হাসপাতালে বিয়ে, রোগী রেখেই উচ্চ শব্দে নাচ-গান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:১০ PM
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:১০ PM

bdmorning Image Preview


বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না গাজীপুরের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের। থেকেই অনিয়ম, দুর্নীতি, দালালদের দৌরাত্ম আর দুর্বল চিকিৎসা সেবা নিয়ে সমালাচনার মুখে থাকা হাসপাতাল নতুন করে নিন্দিত হয়েছে বিয়ের আয়োজন নিয়ে।

নবনির্মিত হাসপাতাল ভবনটির একপাশে ভর্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীরা। তাদের চিকিৎসার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ভবনের অপর পাশে গায়ে হলুদের আনুষ্ঠানিকতা পালন হয়েছে। উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে নেচে গেয়ে উদযাপন করেছেন অভ্যাগতরা।

শুক্রবার দুপুরের খাবারের আয়োজন করার জন্য মসলা বাটা, মুরগি কাটাসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম চলছিল আগের দিন থেকেই।

অভিযোগ উঠেছে, অনুমতি ছাড়াই হাসপাতালের বাবুর্চি আজগর আলীর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছে হাসপাতাল ভবনে। আজগরের দাবি, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই তিনি তার মেয়ের গায়ে হলুদ ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পালন করেছেন।

হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০০ জন। ডেঙ্গু সেলে চিকিৎসাধীন আরও ১৭। এর মধ্যেই হাসপাতালটির এক তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য তোরণ দিয়ে সাজানো হয়।

পাশের পুরনো ভবনটিতে ব্যবস্থা করা হয় রান্না ও দুপুরে খাবারের আয়োজন। এছাড়াও হাসপাতাল করিডোরে হলুদের অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে বাজানো হয় গান

হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা বিষয়টি টঙ্গী পূর্ব থানাকে জানালে পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার গিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেয়। তবে পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে ফের হাসপাতাল চত্বরে প্যান্ডেল করে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়।

একাধিক রোগীর স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে উচ্চ শব্দে গান বাজানো শুরু হয়। হলুদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রান্নার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে হাসপাতালটির বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড। বেশ কয়েকজন রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে বিষয়টি পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানানো হয়।

জানতে চাইলে হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার পারভেজ হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে বিয়ের অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য আমি কাউকে অনুমতি দেইনি। বিষয়টি সম্পূর্ণ হাসপাতাল পরিচালকের এখতিয়ার।’

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতালে গায়ে হলুদের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেই। তবে শুক্রবার আবার বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে কিনা সেটি আমার জানা নাই।’

হাসপাতালের পুরতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় রোগীদের বেড। আর নীচ তলায় একটি কক্ষে মুরগী রাখা হয়েছে। একটি কক্ষে পিয়াজ, মরিচ ও মসলা বাটার কাজ চলছে। রান্নার জন্য ১০-১২ টি ডেগও আনা হয়েছে। হাসপাতালের বিয়ের আয়োজন রোগীরা যেমন বিরক্ত হচ্ছেন তেমনি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ডেঙ্গু ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন সালমা আক্তার বলেন, এটি হাসপাতাল নাকি কমিউনিটি সেন্টার। একটি সরকারি হাসপাতালে ভিতরে বিয়ের আয়োজন করে গান বাজনা হচ্ছে। আর রোগীরা পাশেই ওয়ার্ডে কাতরাচ্ছেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, বিকাল থেকে হাসপাতালে গান বাজানো হচ্ছে। এখন হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

হাসপাতালের পরিচালক কমর উদ্দিন বলেন, আলী আজগর হাসপাতালের একজন স্টাফ। তাই তার মেয়ের বিয়ের আয়োজনের অনুমোতি দিয়েছি। তাতে অসুবিধা কি আছে।

Bootstrap Image Preview